স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান রাষ্ট্রপতির

194

ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
আগামীকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ আহবান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
ঐতিহাসিক এই দিনে তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদেরস্মরণ করেন, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধুসহ সকলস্তরের জনগণকেস্মরণ করেন, যাঁরা বাঙালীর অধিকার আদায় ও মুক্তিসংগ্রামে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে তাঁদের অবদান চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাইতো তিনি স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতীয় জীবনে সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি বৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আজ বাংলাদেশ মহাকাশেও নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছে। জাতি ২০৪১ সালে একটি উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।
আবদুল হামিদ বলেন,সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ বঙ্গবন্ধুর এ আদর্শ অনুসরণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠাসহ আন্তর্জাতিক পরিম-লেও দেশের অর্জন প্রশংসনীয়। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও তাঁদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স প্রেরণের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে বিপুল অবদান রেখে চলেছেন। এতদসত্ত্বেও স্বাধীনতার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে জাতিকে আরো অনেক দূর যেতে হবে। উন্নয়নকে জনমুখী ও টেকসই করতে সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুনভাবে জাতীয় সংসদ ও সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। সংসদকে কার্যকর করতে এবং জনকল্যাণে সরকারের উন্নয়ন ভাবনাসমূহের বাস্তবায়নে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন ।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ হবে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। এ জন্য সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ ঘোষণা করেছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়োজন সকলের আন্তরিক ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।
তিনি বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে সকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, এটাই হোক স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অঙ্গীকার।