বাজিস-৩ : মেহেরপুরের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে ভ্যানে চলাচল করছে

151

বাজিস-৩
মেহেরপুর-ভ্যানে শিক্ষার্থীরা
মেহেরপুরের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে ভ্যানে চলাচল করছে
মেহেরপুর, ২৫ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : তিন চাকার রিকশা-ভ্যানের ওপর পাঁচ ফুট বাই তিন ফুটের খাঁচা। চলতি নাম ‘স্কুল ভ্যান’। মেহেরপুরের রাস্তায় চলা এ ভ্যানগুলো পৌরসভার নিবন্ধিত নয়। এসব গাড়ি দুর্ঘটনা ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্কুল শিক্ষার্থী বহনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভ্যানের কোন পরিসংখ্যান নেই জেলার মেহেরপুর পৌরসভা ও গাংনী পৌরসভায়। নেই চালকদের কোনতথ্য। জেলার কি-ার গার্টেন স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের আনা-নেয়ার জন্য এসব ভ্যানচালকদের সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক কিম্বা স্যালো ইঞ্জিন চালিত ভ্যানের চালক হয়েছেন। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে ভ্যানগুলো। কয়েকদিন আগে জিনিয়াস ল্যাবরেটারী স্কুল এ- কলেজের তিন শিশু শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছে। এসব ভ্যানে শিক্ষার্থী প্রতি মাসিক ভাড়া ২শ টাকা থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত। ব্যাটারিচালিত পরিবহনগুলোর চালক শিশু শিক্ষার্থীদের কোলে বসিয়ে দ্রুতগতিতে চালাতে দেখা যায়।
মেহেরপুরে অযান্ত্রিক যানবাহন (রিকশা, ভ্যান) নিবন্ধন ও অনুমোদনের কর্তৃপক্ষ হচ্ছে পৌরসভা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মকর্তা বলেন- যেহেতু ভ্যানগুলো নিবন্ধন ছাড়া চলছে, এগুলো অবৈধ। তবে বাচ্চাদের স্কুলে যাতায়াতের সঙ্গে জড়িত বলে কিছু বলা হচ্ছে না।
স্কুল কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক বিভাগ বা অভিভাবকেরা কেউই এই বাহনগুলোকে শিশুদের জন্য নিরাপদ বলে মনে করছেন না। স্কুল ভ্যানগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেক। তিন চাকার এ গাড়িগুলোর ভারসাম্য রাখা কঠিন। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। চালকদের জবাবদিহির ব্যবস্থা নেই। তাই তাঁদের দায়িত্ববোধও নেই। এসবের ফল ভুগছে শিশুরা।
বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশন মেহেরপুর জেলা কমিটির সহ সভাপতি জানে আলম বলেন, মেহেরপুর জেলায় এসোসিয়েশনভুক্ত ৫২টি এবং এর বাইরে ২২টি কিন্ডার গার্টেন স্কুল রয়েছে। অধিকাংশ স্কুলেই ভ্যানগাড়িতে শিক্ষার্থীদের আনা নেয়া করা হয়। কাঠামোগত কারণে এগুলো নিরাপদ বাহন নয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।
মেহেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দারা শাহ জানান, এসব বাহন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়াটা অগ্রাধিকার দিই বলে এ ভ্যানগুলোর ব্যাপারে ততটা শক্ত হই না। বাচ্চারা যেন নিরাপদে যেতে পারে, সেই জন্য সাহায্য করি।
সেভ দি চিলড্রেনের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন- স্কুলে যাতায়াতের এসব বাহনের চালক শিশুর জন্য নিরাপদ কি না, তা যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনভিজ্ঞচালকের কারণে দুর্ঘটনায় এপর্যন্ত দুই শিক্ষার্থী মারাও গেছে। তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে স্কুল কোচগুলোকে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, মেহেরপুর জেলাতে তিন চাকার খাঁচার মধ্যে করে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/১২৩৮/নূসী