বাসস ক্রীড়া-৯ : বড় জয় দিয়ে শুরু ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের; হোচট খেল পর্তুগাল

117

বাসস ক্রীড়া-৯
ফুটবল-ইউরো
বড় জয় দিয়ে শুরু ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের; হোচট খেল পর্তুগাল
লিসবন, ২৩ মার্চ ২০১৯ (বাসস) : বড় জয় দিয়ে ইউরো ২০২০ বাছাইপর্ব শুরু করলো ইংল্যান্ড-ফ্রান্স। তবে বাছাইপর্বের শুরুতেই হোচট খেল পর্তুগাল। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে রাহিম স্ট্রার্লিং-এর হ্যাট্টিকে ইংল্যান্ড ৫-০ গোলে হারিয়েছে চেক প্রজাতন্ত্রকে, ‘এইচ’ গ্রুপে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ৪-১ গোলে হারায় মলডোভাকে। তবে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ইউক্রেনের সাথে গোলশূন্য ড্র করে পর্তুগাল।
গেল নভেম্বরের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে ইংল্যান্ড। নিজ মাঠ ওয়েম্বলিতে ম্যাচের শুরু থেকে বল নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয় তারা। তাই প্রথম গোলের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ইংল্যান্ডের প্রথম গোলের স্বাদ এনে দেন স্ট্রার্লিং। মধ্য মাঠ থেকে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় গোল করেন তিনি।
প্রথম গোলের পর ব্যবধান ২-০ করতে বেশ সময় অপেক্ষা করতে হয় ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে গোলের ব্যবধান দ্বিগুন করেন হ্যারি কেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই জ্বলে উঠেন স্ট্রার্লিং। ৬ মিনিটের ব্যবধানে দু’টি গোল আদায় করে নেন তিনি। ৬২ ও ৬৮ মিনিটে গোল দু’টি করে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম হ্যাট্টিকের স্বাদ নেন তিনি। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত স্ট্রার্লিং বলেন, ‘এমন একটি ম্যাচ খেলার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে নিজের সেরা পারফরমেন্স করতে পেরেছি। দলের জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
স্ট্রার্লিং-এর হ্যাট্টিকে ৪-০ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে ফেলে ইংল্যান্ড। কিন্তু ৮৪ মিনিটে আত্মঘাতি গোলে ম্যাচের ব্যবধান ৫-০ করে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।
এদিকে গত নভেম্বরে ফ্রান্সকে হারানোর পর গত রাতেই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। তাও আবার প্রতিপক্ষের মাঠে। প্রতিপক্ষ মলডোভার বিপক্ষে বল পেয়েই নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে ফ্রান্স। কিন্তু ২৪ মিনিটে ঠিকই গোল আদায় করে নেয় দলটি। গিরুদের ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল করেন গ্রিজম্যান। এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই বেশ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ভারানে।
গ্রিজম্যানকে দিয়ে প্রথম গোল করানোর পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন গিরুদ। তাই প্রথমার্ধ শেষ হবার আগেই গোলদাতাদের তালিকায় নাম তোলেন তিনি। ৩৬ মিনিটে ম্যাচের তৃতীয় গোল করে ফরাসিদের ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন গিরুদ। এই স্কোর নিয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ করে ফ্রান্স।
২৪ থেকে ৩৬ মিনিটের ব্যবধানে ৩ গোল করে ম্যাচ জয়ের পথ নিশ্চিত করে ফেলে ফ্রান্স। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে খুজে পাওয়া যায়নি ফ্রান্সকে। গা ছাড়া এবং রক্ষণাত্মক পরিকল্পনায় খেলেছে তারা। তবে ম্যাচের শেষ দিকে জয়ে আনন্দটা বড়ভাবে উদ্যাপনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন এমবাপ্পে। ৮৭ মিনিটে মলডোভার জালে এক হালি গোল পূর্ণ করেন এমবাপ্পে। তাই বড় জয়ে ম্যাচ শেষ করার অপেক্ষার প্রহন গুনতে থাকে ফ্রান্স। তবে ম্যাচের নির্ধারিত সময় শেষ হবার ১ মিনিট আগে সান্তনাসূচক গোল পায় মলডোভা। তাই ৪-১ ব্যবধান রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স। ম্যাচ শেষে ফ্রান্সের প্রথম গোলদাতা গ্রিজম্যান বলেন, ‘বড় জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারাটা অনেক বড় বিষয়। আমাদের পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে কাজে লেগেছে, তাই জয় পেতে সমস্যা হয়নি ।’
এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে হোচট খেয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয়া পর্তুগাল। বিশ্ব আসরে উরুগুয়ের কাছে ২-১ গোলে ম্যাচ হারার পর জাতীয় দলের হয়ে আর কোন ম্যাচ খেলেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। তবে ইউরো বাছাই পর্ব দিয়ে আবারো জাতীয় দলে ফিরলেন তিনি। তার দিকেই তাকিয়েছিল পুরো দল। কিন্তু তার ফেরাটা সুখকর হলো না। নিজের মাঠে খেলার সুবিধাও কাজে লাগাতে পারেননি সিআরসেভেন। ইউক্রেনের সাথে গোলশুন্য ড্র করে পর্তুগাল।
তবে গোলের জন্য ৫/৬টি ভালো সুযোগ পেয়েছিলো পর্তুগাল। প্রথমার্ধের ২৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের গোল মুখের রোনাল্ডোর শটটি ভেস্তে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ৫১ ও ৫৮ মিনিটে আন্দ্রে সিলভার দু’টি ভালো প্রচেষ্টা নসাৎ হয়ে যায়। ম্যাচের শেষের দিকেও আক্রমন করে মুুখে হাসি ফুটাতে পারেনি পর্তুগাল বা ইউক্রেন কোন দলই। শেষ পর্যন্ত গোলশুন্য ড্র হয় ম্যাচটি।
দিনের অন্যান্য ম্যাচে ‘এ’ গ্রুপে বুলগেরিয়া ১-১ গোলে মন্টেনিগ্রোর সাথে ড্র, ‘বি’ গ্রুপে লুক্সেমবার্গ ২-১ গোলে লিথুনিয়াকে হারায়, ‘এইচ’ গ্রুপে তুরস্ক ২-০ গোলে আলবানিয়াকে, আইসল্যান্ড ২-০ গোলে এ্যান্ডোরাকে হারায়।
বাসস/এএমটি/১৭৫৫/মোজা/স্বব