বাসস দেশ-১৯ : ড্রাইভারকে চুক্তিভিত্তিক গাড়ি দেয়া যাবে না : ডিএমপি কমিশনার

166

বাসস দেশ-১৯
ডিএমপি কমিশনার-সভা
ড্রাইভারকে চুক্তিভিত্তিক গাড়ি দেয়া যাবে না : ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা, ২১ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ড্রাইভারদের চুক্তিভিত্তিক গাড়ি না দেয়ার জন্য গাড়ির মালিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ড্রাইভারকে কোন অবস্থায় চুক্তিভিত্তিক গাড়ি দেয়া যাবে না। আপনারা চুক্তিভিত্তিক গাড়ি দেয়া বন্ধ করুন।’
ডিএমপি কমিশনার আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা ও সচেতনতা বিষয়ক’ এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ফিটনেস বিহীন ও মডেল আউট কোন গাড়ি ঢাকা শহরে চলতে দেয়া হবে না।
এসব গাড়ির বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান চালানো হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেক বাস স্টপেজে টিকিট কাউন্টার বসিয়ে টিকিট দিয়ে যাত্রী উঠান। পুলিশ আপনাদের পাশে থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক ব্যবস্থায় আরও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।
পথচারীদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রীজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যত্রতত্র রাস্ত পারাপার হলে ওই পথচারীকে জরিমানাসহ আটক করা হবে।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য পথচারী দায়ী হলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আছাদুজ্জামান বলেন, ‘কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদেরকেই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। জবাবদিহি করতে হয়। অথচ পথচারীর অসচেতনার জন্যেও এসব দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেখানে ট্রাফিক পুলিশের তেমন কিছু করার থাকে না।
কমিশনার বলেন, মেধাবী ছাত্র আবরারের মৃত্যু আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমরা রাস্তায় শৃংখলা রক্ষা করতে পারিনি। এই ব্যর্থতা আমাদের সবার। এর দায়ভার কেউ এড়াতে পারেন না। আমরা কেউ চাইনা এরকম দুর্ঘটনা হোক। সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে কাজ করলে এমন অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা দেখতে হতো না। দুর্ঘটনার প্রধান সমস্যা চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো। চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানোর ফলে রাস্তায় যানজটসহ সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ঘটনা।
তিনি বলেন, রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলা সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটির ঢাকায় চলাচলের অনুমতি ছিল না। ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রুট পারমিট ছিল ওই বাসটির। শুধু তাই নয়, ওই বাসটির নামে এর আগে ২৭ বার প্রসিকিউশন দেয়া হয়েছিল। তাহলে সুপ্রভাত পরিবহনের এই বাসটি রাজধানীতে কিভাবে চলাচল করছিল? এই অনিয়মের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ী।
তিনি আরো বলেন, এক স্টপেজ থেকে অন্য স্টপেজ পর্যন্ত গাড়ির দরজা বন্ধ রাখতে হবে। রুট পারমিট অনুযায়ী গাড়ি চালাতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। শ্রমিক ও মালিক বিরোধী কোন কাজ আমরা করবো না। কিন্তু কথা দিতে হবে সড়কে শৃংখলা আনতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
প্রতিযোগিতাপূর্ণ গাড়ি চালানো, যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করানো, রাস্তায় গাড়ি আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশ দেন কমিশনার।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সড়কের শৃংখলা আনয়নে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান সময়ে আমাদের প্রধান সমস্যা চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো। কাউন্টারে টিকিট দেয়া সিস্টেম চালু হলে চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধ হবে। সেই সাথে কমবে সড়কের দুর্ঘটনার চিত্র। চালকের লাইসেন্স না থাকলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই।
অনুষ্ঠানে ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমদসহ ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, সায়েদাবাদ বাস মালিক সমিতিসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাসস/নিজস্ব/এফএইচ/১৮৫৬/এএএ