বাসস বিদেশ-৬
ইতালি-অপরাধ
ইতালিতে স্কুলবাস ছিনতাই করে অগ্নিসংযোগ
রোম, ২১ মার্চ, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : ইতালির পুলিশ বুধবার ৫১ শিশুকে উদ্ধার করেছে। তারা একটি বাসে করে স্কুলের যাওয়া সময় চালক তাদের জিম্মি করে গাড়িটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভূমধ্যসাগরে শরণার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে লোকটি এই ঘটনা ঘটায়।
৩০ মিনিটের এই ঘটনায় লোকটি কয়েকজন শিশুকে বেঁধে রাখে। বাসটি একটি গাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে। একটি শিশু সাহায্যের জন্য পুলিশে কল করে। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
এই ঘটনার কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
মিলানের প্রসিকিউটর ফ্রান্সিসকো গ্রেসো বলেন, ‘এটা একটা অলৌকিক ঘটনা। ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ হতে পারত। পুলিশ কর্মকর্তারা দারুণ কাজ করেছেন। তারা বাসটিকে আটকে দিয়ে বাচ্চাদের উদ্ধার করেছেন।’
বাস চালক সেনেগাল বংশোদ্ভূত ৪৭ বছর বয়সী ওউসেইনোউ সি।
তার আইনজীবী বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সি জানায় যে তিনি শরণার্থী নীতির পরিণাম সম্পর্কে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছিলেন।
ক্রেমার একটি স্কুলের মাধ্যমিকের ৫১ শিক্ষার্থী একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষে ফিরছিল। তাদের সঙ্গে তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক ছিল।
চালক নির্ধারিত রাস্তায় না চালিয়ে অন্য একটি রাস্তায় বাসটি নিয়ে যায় এবং ছিনতাইয়ের ঘোষণা দেয়।
বেশ কয়েকজন শিশু ও দুই প্রাপ্তবয়স্ক ধোঁয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চাকলকে গ্রেফতার করা হয়। তার হাত পুড়ে যাওয়ায় তাকেও চিকিৎসা দেয়া হয়।
মিলান পুলিশের সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিট এই ঘটনার তদন্ত করছে।
তবে সি এর সাথে ইসলামিক স্টেটের কোন যোগাযোগ নেই।
মিলানের পাবলিক প্রসেকিউটরের অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিটের প্রধান আলবার্তো নোবিলি বলেন, ‘সি চাইছিলেন যে পুরো বিশ্ব তার সম্পর্কে আলোচনা করুক। তিনি বিশ্ববাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চেয়েছেন।’
চালক দুটি পেট্রোল ভর্তি পাত্র ও একটি সিগারেট ধরার লাইটার নিয়ে এই অভিযানে নামে। সে শিশুদের ভয় দেখায়, তাদের টেলিফোন কেড়ে নেয় এবং তাদেরকে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে বেঁধে রাখতে বড়দেরকে নির্দেশ দেয়।
উদ্ধারকারী শিশুরা জানায়, লোকটি তাদের জানায় যে ভূমধ্যসাগরে তার তিনটি সন্তান ডুবে মারা যায়।
উদ্ধারকারী একটি মেয়ে ইতালির গণমাধ্যমকে বলে, ‘তিনি আমাদের হুমকি দেন। আমরা নড়াচড়া করলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখান। তিনি বলেন যে আফ্রিকায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে এবং ইতালির ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ডি মাইও ও সালভিনিই এর জন্য দায়ী।
উল্লেখ্য, জুন মাসে গড়া লুইগি ডি মাইয়ো এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাটিও সালভিনির জোট সরকার শরণার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
তারা ভূমধ্যসাগরে বিপদে পড়া শরণার্থীদের উদ্ধারের জন্য ইতালির বন্দরগুলো থেকে জাহাজ পাঠানো বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করছেন।
বাসস/কেএআর/১৪৫৫/জুনা