নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০

341

ক্রাইস্টচার্চ (নিউজিল্যান্ড), ১৭ মার্চ, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে হামলায় নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে দেশটির সর্বস্তরের মানুষ। বর্বরোচিত এই হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, কর্মকর্তারা নিহতদের পরিচয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
ফরেনসিক দলগুলো প্রায় তিন দিন ধরে আল নূর মসজিদ ও লিনউড মসজিদের কয়েকটি স্থানের পাশাপাশি ডুনেডিনের একটি বাসায় গিয়ে কাজ করেছেন। বাড়িটি নগরীর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এখানেই হামলাকারী ব্রেনটন ট্যারেন্ট থাকত।
নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে ফরেনসিক কর্মকর্তারা এসেছেন।
হামলায় নিহতদের লাশ মসজিদের ভেতরেই রাখা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর জানাজা ও দাফনের জন্য লাশগুলোকে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৪ জন গুরতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
ডাক্তার গ্রেগ রবার্টসন তাদের অবস্থা গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন।
গুরুতর আহতদের মধ্যে ৪ বছর বয়সী আলিন আলসাতিও নামে এক শিশুও আছে। হামলার সময় শিশুটি তার বাবার সাথে আল নূর মসজিদে ছিল। মেয়েটির শরীরে অন্তত তিনটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
তাকে বিমানে করে অকল্যান্ডের স্টারশিপ শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
তার বাবার শরীরেও গুলি লেগেছে। তারা সম্প্রতি জর্দান থেকে নিউজিল্যান্ড আসে।
লোকটি রিচমন্ডের উপকণ্ঠে ওয়াস বারবার নামে একটি নাপিতের দোকান খুলেছিলেন।
তিনি হাসপাতালের বিছানা থেকে ফেসবুকে সকলের কাছে তার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, ‘দয়া করে আমার মেয়েটির জন্য দোয়া করুন।’
তার নিতম্বের হাড়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
এতো দুঃখের মাঝেও আলাবি লতিফ ও অপর এক মুসুল্লির বীরত্বের কথা না বললেই নয়।
ওই মুসুল্লি ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান হত্যাকারীকে ধাওয়া করেন।
তাদের দুজনের সাহসিকতায় অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। এই ঘটনার পরপরই দু’জন পুলিশ কর্মকর্তারা হত্যাকারীকে আটক করে।
নূর মসজিদের হামলার সময় আফগান দাউদ নবী অন্যান্য মুসল্লিদের রক্ষা করতে বন্দুকের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। আর এভাবে অন্য মুসুল্লিদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিহত হন। তার বয়স ৬০ বা ৭০ এর কোঠায়।
তার ছেলে ওমর বলেন, ‘তিনি অন্য মুসুল্লিদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দেন।’
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের পাশে নিউজিল্যান্ডের খ্রিষ্টান নাগরিকরা রাত জেগে প্রার্থনা এবং নিহতদের পরিবার ও মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
সেখানে একটি বড় লাল রঙের ব্যানারে ‘আমরা আমাদের মুসলিম ভাই বোনদের পাশে আছি’ লিখা ছিল।