বাসস ক্রীড়া-৭ : আমরা খুবই ভাগ্যবান : পাইলট

140

বাসস ক্রীড়া-৭
ক্রিকেট-পাইলট
আমরা খুবই ভাগ্যবান : পাইলট
ক্রাইস্টচার্চ, ১৫ মার্চ ২০১৯ (বাসস) : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে হ্যাগলি ওভালের আল নূর মসজিদে খুব কাছের একটি মসজিদে আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টায় গুলি বর্ষন করে সন্ত্রাসীরা। অনুশীলন শেষ করে সে সময় ঐ মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য যাচ্ছিলেন যান বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা। কিন্তু স্থানীয়দের কাছ থেকে সন্ত্রাসী হামলার কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে মসজিদে না গিয়ে স্টেডিয়ামে ফিরে যান খেলোয়াড়রা। পরবর্তীতে জানা যায়, আরও দু’টি মসজিদে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে প্রায় অর্ধশত নিহত ও ২০জন আহত হয়েছে( নিহত আহতদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে)। সন্ত্রাসীদের হামলা আর তিন-চার মিনিট পর হলেও বিপদে ঘনিয়ে আসতো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উপর। তাই ভাগ্যের কৃপায় বেঁেচ যাওয়ায় নিজেদের ভাগ্যবান বলছেন বাংলাদেশের দলের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট।
ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে পাইলট বলেন, ‘এ ধরনের দুর্ঘটনা আমরা কেউই আশা করি না। কোনো দেশেই এমন ঘটনা যেন না ঘটে। আমরা সত্যিকার অর্থেই খুব ভাগ্যবান। বাসে আমরা ১৬-১৭ জন ছিলাম। ঘটনাস্থল থেকে আমরা ৫০ গজের মতো দূরে ছিলাম। আমরা ভাগ্যবান। আর ৩-৪ মিনিট আগেই যদি আমরা আসতাম, তাহলে হয়তো মসজিদের মধ্যে থাকতাম। তখন ভয়াবহ একটা ঘটনা ঘটে যেত। আমি শুকরিয়া আদায় করছি, আমরা খুব সৌভাগ্যবান বলেই বেঁচে গেছি।’
স্থানীয়দের কাছ থেকে সন্ত্রাসী হামলার কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে মসজিদে না গিয়ে স্টেডিয়ামে ফিরে যান খেলোয়াড়রা। ঐ সময় বাসে বসেই রক্তাক্ত মানুষদের মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতেও দেখেছেন তামিম-মুশফিকরা। এ ব্যাপারে পাইলট বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল আমরা মুভি দেখছিলাম। বাসের মধ্যে থেকে দেখছিলাম, রক্তাক্ত অবস্থায় অনেকে বেরিয়ে আসছে। বেশ কিছু মানুষ বেড়িয়ে আসতে পেরেছে। প্রায় ৮/১০ মিনিট আমরা বাসের মধ্যেই ছিলাম। ওখানে সবাই মাথা নিচু করে ছিল। যদি কোনও কারণে বাসে হামলা হয়, আমরা যেন বেঁচে যেতে পারি। অবশ্য পরে বাস থেকে বেরিয়ে এসেছি। কেন না মনে হচ্ছিল সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে এসে এলোপাতাড়ি গুলি করলে কেউই বাঁচবো না।’
ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা দেখে খেলোয়াড়রা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বলেও জানান পাইলট, ‘আমি খেলোয়াড়দের দেখেছি বাসের মধ্যে অনেকেই কান্নাকাটি করছিলো। কি করতে পারে, কিভাবে কি করলে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে এই নিয়েই চিন্তা ছিলো। এটা খুবই কঠিন পরিস্থিতি। সবার ওপরেই মানসিক প্রভাব ফেলে। এটা খুবই স্বাভাবিক। এ অবস্থায় যে কোন মানুষেরই ভেঙে পড়ার কথা।’
এমন সন্ত্রাসী হামলা দেখে আর নিউজিল্যান্ডে থাকতে চাইছেন না বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। দ্রুত দেশের ফিরে আসতে উদগ্রীব হয়ে আছেন মাহমুদুল্লাহ’র দল। পাইলট বলেন, ‘দেশে ফেরার ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্বান্ত হয়নি। হঠাৎ করে একসাথে এতগুলো টিকিট ম্যানেজ করা সহজ কোন ব্যাপার নয়। দু’একজন হলে একটা ব্যাপার ছিল। কিন্তু আমরা এখান থেকে বাংলাদেশে যাব ১৯ জন। অন্য কোচিং স্টাফ যারা আছেন তারা হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে, তারা হয়তো পেয়ে যাবে। তবে ৭/৮ জন করে হলেও যেন আমরা দেশে যেতে পারি, সেটি নিয়েই ভাবছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে চলে যাবার চেষ্টা হচ্ছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিউজিল্যান্ডের অনলাইন সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘স্থানীয় সময় আজ বেলা ১টা ৩০ মিনিটে মসজিদে নামাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর একজন বন্দুকধারী সিজদায় থাকা মুসলিদের লক্ষ্য করে গুলি করে।’
বাসস/এএমটি/১৫৪০/স্বব