মানের জোড়া গোলে বায়ার্নকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টারে লিভারপুল

335

মিউনিখ (জার্মানি), ১৪ মার্চ ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : সাদিও মানের জাড়া গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে লিভারপুল। শেষ ষোলর ফিরতি লেগে গত রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের মাঠেই স্বাগতিক দলকে ৩-১ গোরলে হারিয়েছে প্রিমিয়ার লীগ জায়ান্টরা।
তিন সপ্তাহ আগে এ্যানফিল্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগের ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র হয়েছিল। যে কারণে ম্যাচটি নিয়ে ছিল দারুন উত্তেজনা। কিন্তু আলিয়াঞ্জ এ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে ভিরজিল ফন ডিকের দূরপাল্লার পাস থেকে অসাধারণ এক গোল করে প্রথমার্ধেই সফরকারীদের লীড এনে দেন মানে। খেলা শেষে লিভারপুলের মিডফিল্ডার হামেস মিলনার বিটি স্পোর্টসকে বলেন, ‘তার (মানে) প্রথম গোলটি ছিল অকল্পনীয়। প্রথম মিনিট থেকেই তিনি আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন। আশা করব মৌসুমের বাকীটা সময় পর্যন্ত তিনি এই মেজাজ ধরে রাখবেন।’
অবশ্য প্রথমার্ধেই জোয়েল ম্যাটিপের আত্মঘাতী গোলে সমতা ফিরে আসে ম্যাচে স্বাগতিকরা। বিরতির পর ডাচ সেন্টার ব্যাক ফন ডিকের গোলে ফের ২-১ গোলের লীড পায় গত আসরের রানার্সআপ লিভারপুল। শেষ বাঁশি বাজার মাত্র ৬ মিনিট আগে নিজের দ্বিতীয় গোল করে লিভারপুলের কোয়ার্টার ফাইনালকে শতভাগ নিশ্চিত করেন মানে। এই জয়ে ২০০৮/০৯ মৌসুমের পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ আটে জায়গা করে নিল প্রিমিয়ার লীগের চারটি ক্লাব। কারণ এর আগেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার্স, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটি।
মিলনার বলেন,‘ এটি ইংলিশ ফুটবলের জন্য ভাল দিক। আপনারা এটিই চেয়েছিলেন। গত বছর থেকেই এখানে আমরা ইতিবাচক অনুভুতি পাচ্ছিলাম। আশা করি যতদূর সম্ভব আমরা এটিকে টেনে নিয়ে যেতে পারব।’
অপরদিকে এটি ছিল জার্মান ফুটবলের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। কারণ বায়ার্নের বিদায়ে বুন্দেসলীগার আর কোন প্রতিনিধিত্বই কোয়ার্টার ফাইনালে রইল না। এর আগে টটেনহ্যাম ও ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হেরে শেষ ষোল থেকে বিদায় নিয়েছে জার্মান লীগের অপর দুই ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও শালকে।
২০১১ সালের পর এই প্রথম বায়ার্ন টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারছে না। দলটির ডিফেন্ডার ম্যাটস হিউমেলস বলেন,‘ ম্যাচে দীর্ঘক্ষন দল দুটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় গোল হজমের পর আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায় ম্যাচটি। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে দারুন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন কোচ জার্গেন ক্লপ। যার প্রমান আরো একবার দিলেন তিনি। এই পর্যায়ে এসে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলতে পারিনি। সৃস্টি করতে পারিনি গোলের ভাল সুযোগ।’
ম্যাচের ২৬ মিনিটে গোল করে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন মানে। মাঝমাঠ থেকে ফন ডিকের ক্রসের বল দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দুর্বার গতিতে প্রতিপক্ষের বিপদ সীমানায় ঢুকে পড়েন তিনি। গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার এ সময় তাকে বাঁধা দিতে এগিয়ে এলে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তাকে এড়িয়ে ফাঁকা জালে বল চালান করে দেন সেনেগালের এই ফরোয়ার্ড (০-১)।
৩৯ মিনিটে উপহার পাওয়া গোলে সমতা ফিরে পায় বায়ার্ন মিউনিখ। সের্গে জিনাব্রির নিচু ক্রস পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন জোয়েল ম্যাটিপ (১-১)। ফলে সমতা নিয়েই বিরততিতে যায় দুই পক্ষ।
বিরতির পর ৬৯ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় লিভারপুল। হামেস মিলনারের কর্নারের বলে লাফিয়ে উঠে দর্শনীয় হেডে জালে পাঠান ফন ডিক (১-২)।
ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে মোহাম্মদ সালাহ’র উঁচু করে বাড়ানো বলে অসাধারণ হেডে গোল করে ব্যবধান বাড়ান মানে (১-৩)।