বাসস ক্রীড়া-৪ : ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ লক্ষ্য দানি আলভেসের

130

বাসস ক্রীড়া-৪
ফুটবল-ব্রাজিল-আলভেস-সাক্ষাৎকার
২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ লক্ষ্য দানি আলভেসের
প্যারিস, ৮ মার্চ, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : ইনজুরির কারণে গত বছর রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার দানি আলভেস। তবে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে নিজ দেশ ব্রাজিলের হয়ে শিরোপা তুলে ধরতে চান প্যারিস সেন্ট জার্মেই’র (পিএসজি) এই ডিফেন্ডার।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এই ব্রাজিলীয় তারকা বলেন, ‘আমার কোন মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ নেই। আমার দেহই এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। সে রকম কিছু দেখলে আমি আর প্রতিযোগিতায় নামব না। তাৎক্ষণিকভাবেই থেমে যাব।
এখন আমি যেটি করতে চাই, সেটি হচ্ছে ২০২২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে দেশকে শিরোপা পাইয়ে দেয়ার চেষ্টা। সেখানে গিয়েই আমি লড়াই করতে চাই। আমি যে মূল ভূমিকা রাখব তা নয়, তবে আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে।’
গত মৌসুমে পিএসজির হয়ে ফ্রেঞ্চ কাপের ফাইনালে হাঁটুর গুরুতর ইনজুরিতে পড়েছিলেন আলভেস। এর এক মাস পরেই অনুষ্ঠিত হয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। সে সময় ৩৫ বছর বয়সে পড়া আলভেসকে মাঠে ফিরতে প্রায় ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে।
মাঠে ফেরার পর থেকেই পিএসজিতে তিনি থমাস টাচেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। অতি সম্প্রতি তিনি ব্রাজিল জাতীয় দলেও নতুন করে ডাক পেয়েছেন। গত মৌসুমের ফ্রেঞ্চ কাপটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ৩৮তম ট্রফি। তন্মধ্যে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের তিনটি ট্রফিও রয়েছে।
আলভেসের বায়োডাটায় একটি মাত্র শিরোপা বাদ রয়েছে। সেটি হচ্ছে বিশ্বকাপের শিরোপা। তাই ব্রাজিলের হয়ে ওই শিরোপাটি জয়ের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারকে পরিপূর্ণতা দিতে চান এই ব্রাজিলীয়। যদিও যখন ওই টুর্নামেন্ট শুরু হবে তখন তার বয়স হবে ৩৯ বছর। আলাভেস বলেন, ‘ওই কারণেই সেটি জয় করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চাই। এটি যেন আমার স্বপ্নের নায়িকার সঙ্গে মোলাকাত সম্পন্ন করা। তাকে আমি কি বলতে চাই? বলতে চাই তার জন্য আমি সব চেষ্টাই করব। একবার ধারণা করুন ক্যারিয়ারের সমাপ্তি লগ্নে আমি বিশ্বকাপ জয় করতে চাই।’
যখন আলভেসের চেয়েও কম বয়সের খেলোয়াড়দের এরকম গুরুতর হাঁটুর ইনজুরি থেকে ফেরার বিষয়ে শংকিত থাকতে হয়েছে, তখন এই ব্রাজিলীয়ান বলছেন ‘মাঠে ফেরার বিষয়ে’ তার কোন সন্দেহই ছিলনা।
পিএসজিতে নিজের দ্বিতীয় মৌসুমে অংশ নেয়ার সময় আলভেসকে দেখা গেছে খেলার সেরা ফুল ব্যাক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে। মিডফিল্ডার হিসেবে তাকে নতুন করে আবিস্কার করেছেন পিএসজি কোচ টাচেল।
অবশ্য বিকল্পের অভাবে সাময়িক সময়ের জন্যই এই কাজটি করেছেন তিনি। তবে আলভেসের মতে ডান প্রান্ত থেকে উপরে উঠে এবং নেমে খেলার জন্য তাকে কোন বেগ পেতে হয় না। এর সঙ্গে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তিনি বলেন,‘ কোচ আমার বুদ্ধিমত্তা এবং খেলার ধরণ দেখে ওই জায়গায় ব্যবহার করেছেন। সেখানে আমি আমার শারিরিক সামর্থ্যের চেয়ে বেশী দক্ষতা দেখাতে পেরেছি। কারণ মিডফিল্ডার হিসেবে আমি অনেক বেশী দৌঁড়াতে পারি এবং একজন ফুল ব্যাকের চেয়ে বেশী চেস্টা করতে পারি। এটি শারিরিক সামর্থ্যের বিষয় নয়। আমি ফুল ব্যাক হিসেবে খেলতে পারি। সেই সঙ্গে খেলার ধরনটিকে আমি বেশী করে পড়তে পারি।’
আলভেস বলেন, ‘মধ্যমাঠে আমি আমার সর্তীর্থদের ভুলগুলো শুধরাতে পারি। তাদের চেয়ে বেশী দ্রুত চিন্তা করতে পারি। যে কারণে কোচ আমাকে ফুল ব্যাকের জায়গা থেকে সেখানেই বেশী ব্যবহার করতে চেয়েছেন।’
২০০২ সালে সেভিয়ার মাধ্যমে প্রথম ইউরোপীয় ফুটবলে যুক্ত হয়েছিলেন আলভেস। আর এখন সুপারস্টার সদস্যদের মধ্যে তিনিও বেশ ভাল মজুরি পাচ্ছেন। তার দাবী শুরুর দিকে এটিকে তার কাছে ‘বেশ কঠিন’ মনে হয়েছে।
স্পেনে দীর্ঘ ১৪ বছর কাটানোর পর জুভেন্টাসে একটি মৌসুম কাটিয়েছেন আলাভেস। এরপর ২০১৭ সালে পিএসজিতে যোগ দেন এই ব্রাজিলীয়। স্বদেশী নেইমার যোগ দেয়ার কিছুটা আগে তিনি প্যারিসে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
চলতি মৌসুম শেষেই পিএসজির সঙ্গে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আলভেসের। তবে তিনি এবং তার মডেল সঙ্গীনী প্যারিসের সময়টিকেই বেশী উপভোগ করছেন। আলভেস নিজেও ফ্যাশন ভালবাসেন। তাহলে তিনি কি সেখানেই দীর্ঘ সময় কাটাতে চান? জবাবে বলেন, ‘এটা আমার উপর নির্ভর করছেন না। যদি সেটি আমার উপর নির্ভর করত, তাহলে বলতাম হ্যাঁ, আমি চাই।’
আলভেস বলেন, ‘মানুষ শুধু বয়সের দিকে তাকিয়ে থাকে। একবার আপনি যদি ৩০ পেরিয়ে যান তাহলে সবাই আপনার দিকে কৌতুক দৃষ্টিতে তাকাবে। যখন ৩৫ বছর পার করবেন তখন জিজ্ঞেস করবে, কখন আপনি থামছেন?’ তাদেরকে বলছি, শান্ত থাকুন। আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নিব কখন আমি থামছি।’
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৫০৫/-স্বব