বাসস ক্রীড়া-৫ : বিশ্বকাপে খেলার জন্য খেলোয়াড়দের ইনজুরির সঙ্গে লড়াই

205

বাসস ক্রীড়া-৫
ফুটবল-বিশ্বকাপ-খেলোয়াড়-ইনজুরি
বিশ্বকাপে খেলার জন্য খেলোয়াড়দের ইনজুরির সঙ্গে লড়াই
প্যারিস, ৫ জুন ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : বিশ্বকাপকে খেলার লক্ষ্যে অনেক অভিজাত ফুটবলারকেই সংগ্রাম করতে হয়েছে ইনজুরির সঙ্গে। আসন্ন বিশ্বকাপে এই খেলোয়াড়দের ইনজুরি থেকে মুক্তি ও প্রস্তুতি নিয়ে এই প্রতিবেদন।
এটি ঠিক যে প্রতিটি ক্রীড়াবিদের সচেতনতা, লক্ষ্য, মানসিক অবস্থা নিরুপন করা বেশ কঠিন। তারপরও গবেষকদের গবেষনায় দেখা গেছে চমৎকার এই খেলাটি এখন আরো বেশি গতি পেয়েছে। খেলোয়াড়দের পয়ের কারুকাজে আরো দ্রুতগতির প্রয়োজনীয়তা এসেছে, যে কারণে তাদের কস্টের মাত্রা এবং ঝুঁকির পরিমানও বেড়ে যাচ্ছে। বিপরীতে বিশ্রাম এবং আরোগ্য লাভের সময়ও কমে আসছে।
প্রতি চার বছর অন্তর বিশ্বেও শীর্ষ দলগুলো ফুটবলের এই বিশাল আয়োজনে যুক্ত হয় নিজেদের শীর্ষ প্রতিযোগিতা শেষ করে। এবারের ২০১৮ বিশ্বকাপ শুরুর তিন সপ্তাহেরও কম সময় আগে শেষ হয়েছে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ১৪ জুন।
১৯৯০ সালে ইংল্যান্ড দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে সহায়তা দেয়া লন্ডনের সেন্ট মেরি’স বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাপলাইড স্পোর্টস সাইন্স বিভাগের প্রফেসর জন ব্রেয়ার বলেন,‘ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্লাবগুলোর প্রকৃত কোন দৃস্টিভঙ্গি নেই। তারা চায় টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শতভাগ সামর্থ্য আদায় করে নিতে। এর বাইরে বিশ্বকাপ না অন্য কিছু হচ্ছে হচ্ছে সে বিষয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।’
ট্রেইনাররা তাদের ক্রীড়াবিদদের জন্য ব্যবহার করেন হাই টেক প্রযুক্তি। প্রশিক্ষণ বা অনুশীলন সেশনে তাদের প্রতিটি চলাচল পর্যবেক্ষনে ব্যবহৃত হয় জিপিএস। তাদের দৌঁড় থেকে শুরু করে গতির পরিবর্তন সহ তাদের হার্ট রেটও এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষন করা হয়।
ফরাসি ফুটবল ফিজিক্যাল ট্রেইনার বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ক্যাটেরিনা বলেন,‘ খেলা বা অনুশীলন শেষ করে ঘরে ফেরার সময় খেলোয়াড়দের দিয়ে দেয়া হয় ঘুমের ধরন থেকে শুরু করে একটি পরিপূর্ণ খাদ্য তালিকা। সেই সঙ্গে দেহের কোথাও কোন ব্যাথা অনুভুত হচ্ছে কি-না তাই পরখ করা হয়।’
তিনি বলেন,‘ বিশ্বকাপের কয়েক সপ্তাহ আগে খেলোয়াড়দের লড়াই করার দক্ষতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এবং এরপর তাদের চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়। এ সময় কারো অসাধারণ ফিটনেস থাকে, কারণ তাদের অপেক্ষাকৃত কম খেলতে হয়েছে। তারা এমন অবস্থা অনেকভালভাবে সামাল দিতে পারে। আর যারা অত্যধিক খেলার চাপ নিয়েছে তাদেরকে বাদ পড়তে হয়।
অতি চাপ নেয়া খেলোয়াড়দের পেশীর ক্ষতি পুনরুদ্ধারের জন্য গরুম ও ঠান্ডা পানিতে গোসলের পরামর্শ দেয়া হয়। সেই সঙ্গে ম্যাসেজ ও অন্যান্য চিকিৎসাও দেয়া হয়। তারপরও তারা পুরোপুরি ফিটনেস ফিরে পায় না। যে কারণে সামর্থ্যের তুলনায় খারাপ পারফর্মেন্স প্রদর্শন করতে বাধ্য হয়।
একটি ভাল অবস্থায় খেলোয়াড়দের রাখার চেষ্টা থাকলেও সব সময় সেটি কার্যকর হয় না। ২০০২ সালে বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ৫দিন আগে অনুশীলনের সময় পেশীর সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ফ্রান্সের তৎকালীন সুপার স্টার জিনেদিন জিদান। যে কারণে জাতীয় দলের তার পারফর্মেন্স প্রত্যাশা মাফিক হয়নি।
এই মুহূর্তে তারকা স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহকে নিয়ে একই রকম সমস্যায় পড়েছে মিশর। গত ২৬ মে লিভারপুলের হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে খেলার সময় কাঁধে আঘাত পেয়েছেন সালাহ। বর্তমানে স্পেনে চিকিৎসাধীন সালাহ মিশরের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াডে থাকলেও মাঠে তার অংশগ্রহণ এখনো পর্যন্ত অনিশ্চিত।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৫৪৫/স্বব