দেশের উন্নয়নে সবাইকে নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে : শেখ হাসিনা

330

সংসদ ভবন, ৬ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে সরকার দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে দেশের সব নাগরিক সমান।
তিনি এ পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের ১৯ (১) অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন’।
শেখ হাসিনা বলেন, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময়ই জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির ওপর আস্থাশীল। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সরকারের উন্নয়ন কাজে সব নাগরিকের অংশগ্রহণ জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন দল বা সংগঠন করতে পারি, আমাদের মতের ভিন্নতাও থাকতে পারে। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, প্রতিপক্ষ দলকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর দলের নেতা-কর্মীরা এ ধরনের বৈরী আচরণের শিকার হয়েছেন বার বার।’
তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পরদিন থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকগণ চরম নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বারবার হামলার শিকার হয়েছি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ২২ নেতা-কর্মীসহ ২৪ জন নিহত এবং ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছিলেন। যারা বেঁচে আছেন শরীরে স্পিøন্টার নিয়ে দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আওয়ামী লীগ সাম্য, ভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যে বিশ্বাসী। এজন্য আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। আমাদের দৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিক সমান। আমরা সবার জন্য কাজ করব।
তিনি বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে আমি বলেছিলাম, ‘এখন আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ঐক্যের যোগসূত্র হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি।’
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আমরা দেশের সকল নিবন্ধিত দলের সঙ্গে সংলাপ করেছি। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা সংসদকে সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। সংসদের বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্য, নিরক্ষরতার অভিশাপ মুক্ত বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এজন্য আমি দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা চাই।