নাটোরে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে

434

নাটোর, ৫ মার্চ, ২০১৯ ( বাসস ) : অল্প খরচে অধিক মুনাফা প্রাপ্তির প্রত্যাশায় নাটোরে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। চলতি রবি মৌসুমে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভুট্টার আশাতীত ফলন হবে।
সরেজমিনে নাটোরের হালতিবিলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অধিকাংশ কৃষক ভুট্টা আবাদ করেছেন। গাছগুলো বেশ বড়ও হয়ে উঠেছে। এখন ক্ষেতগুলোর পরিচর্যা ও নিড়ানী এবং সেচ কাজসহ নানা কর্মযজ্ঞ চলছে।
নাটোর সদর উপজেলার উঁচু এলাকার জমিগুলোতে আগাম রোপণ করা গাছ মানুষের উচ্চতাকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও গাছে ফলও এসেছে। এসব ফলন আগাম ঘরে তোলা যাবে।
হালতিবিলের হালতি গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, গত মৌসুমে বোরো ধানে লোকসান হওয়ায় এবার বোরোর ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন । ধানের তুলনায় উৎপাদন খরচ ও সময় দু’টোই কম লাগে। তার মত অনেকেই ভুট্টার আবাদ করেছেন।
নলডাঙ্গা উপজেলার খোলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কাউছার রহমান বলেন, এবার হালতিবিলে আগেই পানি নেমে গেছে। তাই আগে ভাগেই ভুট্টার বীজ রোপণ করেছি। ভুট্টার পর সেখানে তিলের আবাদ করবো।
শাখাড়িপাড়া গ্রামের বজলুর রশিদ জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার আবাদ লাভজনক তাই তারা রসুনের পরিববর্তে ভুট্টার আবাদ করেছেন। একই কথা আরো অনেক কৃষকের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় চার হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ছয় হাজার ৬৫২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪২০ হেক্টর বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ১ হাজার ৭৩৭ হেক্টর, সিংড়ায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ১ হাজার ৫০ হেক্টর, বড়াইগ্রামে ৭৯০ হেক্টর, লালপুরে ১৪৫ হেক্টর এবং বাগাতিপাড়া উপজেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে।
মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪১ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হলেও তা ৫০ হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মেহেদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে ভুট্টার কিছুটা ক্ষতি হলেও কৃষকরা তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নাটোরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম বাসস’কে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করা যায় ভুট্টার আশাতীত ফলন হবে।