মনপুরায় সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্র বদলে দিয়েছে জীবন যাত্রা

681

ভোলা, ৩ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : জেলার মনপুরা উপজেলায় স্থাপিত সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্র বদলে দিয়েছে দ্বীপবাসীর সার্বিক জীবন যাত্রা। উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় ৯২ শতাংশ জমির উপর ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। এতে করে তথ্য প্রযুক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে এসেছে আমূল পরিবর্তন। মানুষ ঘরে বসেই টেলিভিশনে দেখতে পাচ্ছে দেশ ও বিদেশের নানান খবর। বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। স্বাবলম্বী হচ্ছে মানুষ। এখন আর অন্ধকারে নেই ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরার সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মনপুরায় ২০১৪ সালে সোলার ইলেকট্রো বাংলাদেশ লিঃ কম্পানি কেন্দ্রটি স্থাপনের কাজ শুরু করে। ২০১৫ সালে কাজ শেষ হয়। এখানে ১৭৭ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বরফ মিল, স’মিল, মুড়ির মিল, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ আবাসিক মিটার গ্রহকের সংখ্যা ৫৭৮ জন। ২৪ ঘন্টা সোলার মিনি গ্রীড থেকে বিদ্যুত পাচ্ছেন এলাকাবাসী।
বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. মোতালেব হোসেন ও হারুন মিয়া জানান, আমরা আগে অন্ধকারে জীবন কাটাতাম। এখন আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ায় বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে চারপাশ। এতে করে জীবন যাত্রার মানও অনেক উন্নত হয়েছে। গৃহিনী কামরুন নাহার জানান, বিদ্যূতের আলোয় আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার মান বেড়েছে। আগে সন্ধ্যার পর হারিকেনের আলোতে বাচ্চারা পড়াশোনা করতো। বেশি সময় পড়তে পারতোনা। এখন অনেক রাত পর্যন্ত বিদ্যুতের আলোতে লেখা পড়া করতে পারছে। আমাদের রান্না-বান্নাও বিদ্যুৎ আসায় সহজ হয়েছে।
একই এলাকার ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, আগে আমি বেকার ছিলাম। বিদ্যুৎ আসার ফলে আমি একই দোকান ভাড়া নিয়ে ফটোকপি, কম্পিউটার দোকান দেই। এ বিদ্যুৎ দিয়ে ফটোকপি, কম্পিউটারসহ মানুষের দৈনিক ও অফিসিয়াল কাজগুলো সহজেই করতে পারি। বিদ্যুতে ব্যবসা পরিচালনা করে এখন আমি স্বাবলম্বী।
উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বাসস’কে বলেন, বিদ্যুৎ আসায় এলাকায় অনেক বেকারত্ব কমেছে। বিদ্যুতের ওপর ভিত্তি করে অনেক ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। বিদ্যুৎ ভিত্তিক যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। এলাকায় বিদ্যুৎ আসায় চুরি-ডাকাতির নেই। মানুষ কর্মমূখী হচ্ছে।
মনপুরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাসস’কে জানান, সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে মনপুরা উপজেলার ২০ ভাগেরও বেশি মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়াও মনপুরায় আরো দুইটি সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।