সুয়ারেজের জোড়া গোলে রিয়ালকে হারিয়ে কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনা

169

মাদ্রিদ, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : লুইস সুয়ারেজের জোড়া গোলে কোপা ক্লাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা। বুধবার অনুষ্টিত ম্যাচে ৩-০ গোলের এই জয়ে রেকর্ড ৫ বারের শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে কাতালান জায়ান্টরা।
সান্তিয়াগো বার্নব্যুতে এর আগের ম্যাচে অপেক্ষাকৃত ভাল খেলেছিল রিয়াল। ওই ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। তবে গতকালের ওই পরাজয়ে দুই লেগে মিলিয়ে ৪-১ গোলে এগিয়ে থেকে কোপা দেল রে ফুটবলের ফাইনাল নিশ্চিত করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
গতকাল হ্যাট্রিকের দ্বারপ্রান্তেই পৌছে গিয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু ওসমানে ডেম্বেলের ক্রসের বলটি তাকে ধরতে দেননি রাফায়েল ভারানে। বরং তার আত্মঘাতি গোলে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেই সন্তুস্ট থাকতে হয়েছে উরুগুয়ে তারকা সুয়ারেজকে। এই নিয়ে মাদ্রিদের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচের বিপরীতে তার গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টি।
খেলা শেষে বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দে বলেন,‘ লিওনেল মেসি ছাড়াও আমাদের দলে গোল করার মত আরো খেলোয়াড় রয়েছে। লুইসের গোল সংখ্যাও অনেক । বার্সার জন্য এটি ঐতিহাসিক। আমরা জানি সে সব সময় গোল করে।’
এর আগে গত অক্টোবরে ক্যাম্প ন্যুতে রিয়ালকে ৫-১ গোলে হারিয়েছিল বার্সা। ফলে চলতি মৌসুমে দুই ক্লাবের তিন দফা লড়াইয়ে দল দুটির মধ্যে পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ৯-২ গোলের। যা আগামী শনিবারের এল ক্লাসিকোতে বার্সাকে ব্যাপক অনুপ্রেরনা যোগাবে।
রিয়াল মাদ্রিদের কোচ সান্তিয়াগো সোলারি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দু:খিত। ফাইনালে খেলতে চেয়েছিলাম। তবে আমরা মাথা উচু করেই বিদায় নিচ্ছি। কারণ আমরা সামর্থ্যের সবকুটুই উজাড় করে দিয়েছি । কিন্তু প্রাপ্ত সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আর তারা পেরেছে।’
ম্যাচে ভাল খেললেও সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারার অপরাধ ১৮ বছর বয়সি ভিনিসিয়াস জুনিয়রের উপরই বর্তায়। তবে বিষ্ময়ের বিষয় হচ্ছে ম্যাচটিতে সাইড বেঞ্চেই ছিলেন গ্যারেথ বেল। ম্যাচের ২০ মিনিটের সামান্য বেশী খেলার সুযোগ পেয়েছেন এই ওয়েলস সুপার স্টার। এরই মধ্যে বেশ দ্রুতই ৩-০ ব্যবধানের লীডে পৌছে গিয়েছিল বার্সা।
অপরদিকে বুধবারের জয়ে টানা ষষ্ঠবারের মত রেকর্ড সংখ্যক কোপা দেল রের ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেছে ভালভার্দের শিষ্যরা। ফাইনালে তারা হয় ভ্যালেন্সিয়া নতুবা রিয়াল বেতিসের মোকাবেলা করবে।
গতকাল ম্যাচ শুরুর দিকে দুই দলই সময় কাটিয়েছে পরস্পরকে বুঝে নেয়ার মধ্যে। এ সময় মুলত আক্রমন ও পাল্টা আক্রমনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল খেলাটি। উভয় দলের মধ্যে ভুল পাসের ঘটনাও পরিলক্ষিত হয়। ইভান রাকিটিচ যেমন কাসেমিরোকে প্রহরায় রেখেছিলেন তেমনি লিওনেল মেসিকে চোখে চোখে রেখেছেন টনি ক্রুস। এরই মধ্যে গোলের মোক্ষম সুযোগটি পেয়ে গিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তিনি বার্সার বিপজ্জনক এলাকায় পৌছেও সফল সমাপ্তি টানতে পারেননি।
এ সময় অবশ্য বার্সার ডিফেন্ডার নেলসন সেমেদো তাকে বেশ কয়বার বিপজ্জনকভাবে প্রতিঘাত করেছেন। কিন্তু সে গুলো সম্ভবত খুব একটা জোড়ালো ছিলনা। যে কারণে তার পেনাল্টির আবেদন গ্রহন করেননি কর্তব্যরত রেফারি। বার্সা সুপার স্টার লিওনেল মেসিও একাধিক সুযোগকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিরতির পর শেষ পর্যন্ত গোলের খাতা খুলে বার্সেলোনা। ৫০ মিনিটের সময় ওসমানে ডেম্বেলের পাস থেকে প্রথম লক্ষ্য ভেদ করেন উরু গুইয়ান তারকা সুয়ারেজ। পোস্টের ভেতর ডেম্বেলে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুয়ারেজকে ব্যাক পাস করে দিলে সেটিকে দারুন এক গোলে পরিণত করেন তিনি (১-০)।
এরপর বেল রিয়ালের আক্রমনের দায়িত্ব নিলেও ওই সময় আরো দুটি গোল হজম করতে হয় রিয়ালকে। ৬৯ মিনিটে ফের ডেম্বেলে একটি বল সুয়ারেজকে ব্যাক পাস করে দিলেও সুয়ারেজের পরিবর্তে বলটিতে ছোঁয়া লাগে রিয়াল ডিফেন্ডার ভারানের। তার গায়ে লেগে সিটি নিজ বক্সে আশ্রয় নিলে দ্বিগুন ব্যবধানে পৌছে যায় বার্সেলোনা (২-০)।
চার মিনিট পর কাসেমিরো সুয়ারেজের পায়ের গোড়ালিতে আঘাত করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। পেনাল্টি থেকে গোল করে কাতালানদের ৩-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেন সুয়ারেজ।