অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য পুরাতন ঢাকার কেমিক্যাল শ্যামপুর ও টঙ্গিতে সরানোর সিদ্ধান্ত

329

ঢাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : পুরাতন ঢাকার বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত কেমিক্যাল অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য রাজধানীর শ্যামপুর এবং টঙ্গিতে নিরাপদ স্থানে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
কদমতলী থানার শ্যামপুর মৌজায় অবস্থিত বিসিআইসির উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টঙ্গির কাঠালদিয়া মৌজায় বিএসইসির খালি জায়গায় এগুলো সরিয়ে নেয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে দু’টি স্থান মিলিয়ে ১২ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৪ লাখ বর্গফুট আয়তনের স্টিল সেড নির্মাণ করে এগুলো সংরক্ষণ করা হবে।
চকবাজারে অগ্নিকা-ের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভবনে রক্ষিত দাহ্য কেমিক্যাল নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর বা সংরক্ষণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য জায়গা নির্ধারণের বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় আজ এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় শিল্প, ভূমি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, কৃষি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়,রাজউক,জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ,ফায়ার সার্ভিস,পুলিশ,বিসিআইসি,বিএসইসি,বিএডিসি,ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন,ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি এবং কেমিক্যাল ও প্লাস্টিক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পুরাতন ঢাকার ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাময়িক সময়ের জন্য বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উপযুক্ত স্থান নির্ধারণের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় ব্যবসায়ী নেতাদেরকে আগামীকালের মধ্যে তাদের কেমিক্যাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় জায়গার পরিমাণ নির্ধারণ করে লিখিতভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়কে জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়। আলোচনা শেষে রাজধানীর শ্যামপুর এবং টঙ্গির নিরাপদ স্থানে এগুলো সরানোর বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় কেমিক্যাল ও এসিড ব্যবসায়ীরা বলেন, চকবাজারে অগ্নি দুর্ঘটনার পর কেমিক্যাল ইস্যুতে স্থানীয়ভাবে এক ধরণের ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ধরণের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরাতন ঢাকার প্রায় ২৫ লাখ ব্যবসায়ী বেকার হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন। তারা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিদ্যমান ভীতি দূর করতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন। সাময়িকভাবে টঙ্গিতে নির্ধারিত জায়গায় এসিড ও শ্যামপুরের জায়গায় কেমিক্যাল সরানোর বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানী ঢাকা থেকে নিরাপদ স্থানে কেমিক্যাল স্থানান্তরের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এগুলো স্থানান্তরের জন্য ব্যবসায়ীদেরকে জায়গা করে দেয়া হবে। জননিরাপত্তার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য এসিড ও কেমিক্যাল স্থানান্তর বা সংরক্ষণের জন্য দু’টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও জায়গা প্রয়োজন হলে, শিল্প মন্ত্রণালয় তারও ব্যবস্থা করবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, টঙ্গি ও কদমতলীতে সরকারের খরচেই স্টিল স্ট্রাকচার নির্মাণ করে দেয়া হবে। তবে ব্যবসায়ীরা সেখানে যৌক্তিক ভাড়ায় কেমিক্যাল সংরক্ষণ করবেন। তিনি আগামী ৩ দিনের মধ্যে কমপ্লায়েন্স মেনে এ বিষয়ে কারিগরি প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য বিএসইসি এবং বিসিআইসিকে নির্দেশনা দেন। জাতীয় জরুরি প্রয়োজনে এরপরই দ্রুত সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি এ লক্ষ্যে সরকারের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।