বাসস ক্রীড়া-৬ : সিরিজ বাঁচানোর মিশনে নামছে বাংলাদেশ

436

বাসস ক্রীড়া-৬
ক্রিকেট-টি-২০
সিরিজ বাঁচানোর মিশনে নামছে বাংলাদেশ
দেরাদুন (ভারত), ৪ জুন ২০১৮ (বাসস) : আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যান-বোলারদের মিলিত নৈপুণ্যে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটি ৪৫ রানে হারে বাংলাদেশ। ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ভালো অবস্থায় আফগানরা। সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে তারা। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচ হেরে চাপে বাংলাদেশ। সিরিজ হার এড়ানোই এখন একমাত্র টার্গেট সাকিবের দলের। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনতে আগামীকাল দেরাদুনে আবারো মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-২০ও শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।
শক্তি ও র‌্যাংকিং-এর বিচারে এগিয়ে থেকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ শুরু করে আফগানিস্তান। এগিয়ে থাকাটা যে, শুধুমাত্র কাগজে কলমে নয় সেটির প্রমাণ প্রথম ম্যাচেই দিয়ে দেয় আফগানরা। ব্যাটসম্যানদের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং-এর পর বোলারাদের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে হারের লজ্জা দেয় আফগানিস্তান। ৪৫ রানের হারের স্বাদ পেতে হয় টাইগারদের।
দেরাদুনে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিং-এর শুরুটা ধীরগতির হলেও, নিজেদের ইনিংসে শেষ পাঁচ ওভারে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। শেষ ৩০ বলে ৭১ রান যোগ করে তারা। ১৬তম ওভারে ৯, ১৭তম ওভারে ১০, ১৮তম ওভারে ২০, ১৯তম ওভারে ১৩ ও শেষ ওভারে ১৯ রান তুলে নেয় আফগানিস্তানের সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, শফিকুল্লাহ, রশিদ খান ও অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই।
বলের সাথে পাল্লা দিয়ে ২৪ ডেলিভারিতে ২৫ রান তুলেন স্টানিকজাই। তবে সামিউল্লাহ, শফিকুল্লাহ ও রশিদ ছিলেন ব্যতিক্রম। সামিউল্লাহ ৩টি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ৩৬, শফিকুল্লাহ ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮ বলে ২৪ ও রশিদ ১টি ছক্কায় ২ বলে অপরাজিত ৬ রান করেন। এতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। ১ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলিং পারফরমার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অথচ পরবর্তীতে বোলিং করার সুযোগই পাননি তিনি। তবে যারা বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজন ত্রিশোর্ধ্ব ও একজন চল্লিশোর্ধ্ব রান দেন। তারা হলেনÑ আবু জায়েদ, নাজমুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও আবুল হাসান। ৩ ওভারে সর্বোচ্চ ৪০ রান দেয়া আবুল ২টি উইকেটও নিয়েছেন।
জয়ের ১৬৮ রানের টার্গেটের শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ডেলিভারিতেই শূন্য হাতে ফিরেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে আইপিএলে ১১ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেয়া মুজিব উর রহমান তামিমকে বিদায় দেন।
এরপর লিটন দাস, সাকিব ও মুশফিকুর রহিম দলকে সামনে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। ঐসময় বাংলাদেশের পথে কাটা হয়ে দাঁড়ান আফগানিস্তানের অফ-স্পিনার মোহাম্মদ নবী ও রশিদ। লিটন ও সাকিবকে শিকার করেন নবী এবং মুশফিক-সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে ফেরান রশিদ। দলের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১২২ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। লিটন ৩০, মাহমুদুল্লাহ ২৯, মুশফিকুর ২০ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন শাপুর জাদরান ও রশিদ।
ম্যাচ হারের জন্য নিজেদের বোলিংয়ের শেষের চার ওভারকে দুষছেন সাকিব, ‘শেষ দিকের ওভারগুলো বাদে আমরা ভালো বল করেছিলাম। শেষদিকে ৪ ওভারে ৬৪ রান দিয়েই আমরা ম্যাচ হেরেছি। এখনো অনেক কিছু করার আছে, আমাদের এক সাথে বসতে হবে এবং দেখতে হবে কোন জায়গাতে আরও উন্নতি করা যায়। অবশ্যই তারা ভালো দল, প্রত্যকটি বিভাগেই তারা ভালো খেলেছে। মাহমুদুল্লাহকে বল না দেয়ার সিদ্বান্তটি কঠিনই ছিলো। যদি আমি তাকে আরও এক ওভার বোলিং করতে দিতাম এবং সে কিছু ছক্কা খেতো তবে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করতে নিয়মিত বোলার না হবারও পর কেন আমি তাকে বল দিলাম। যখন ১৭০-এর কাছাকাছি রান চেজ করতে হয় তখন ভালো ব্যাটিং করা প্রয়োজন। টপ-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ভালো করা দরকার ছিলো কিন্তু আমরা উইকেট বিলিয়ে দিয়েছি। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। তাদের মানসম্মত স্পিনার আছে এবং তারা ভালো করেছে।’
আফগানিস্তানের অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই বলেন, ‘প্রত্যকটি সিরিজ, প্রত্যক টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষভাবে আজ ব্যাটসম্যানরা খুবই ভালো করেছে। মিডল-অর্ডারে কিছু উইকেট হারানোর পর শফিক ও সামিউল্লাহ লড়াই করার সাহস দিয়েছে। আমার বোলারদের সর্ম্পকে আমি জানি, কিভাবে তাদের ব্যবহার করতে হয়। এই কন্ডিশন আমাদের জন্য ভালো ছিলো। আমরা উইকেট ও কন্ডিশন সর্ম্পকে ভালোভাবেই জানি। গ্যালারিতে আফগানিস্তান দর্শকদের উপস্থিতির কারনে তাদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমার মনে হয়েছে আমরা আফগানিস্তানের আছি।’
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুুল্লাহ রিয়াদ (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, আবুল হাসান রাজু, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী।
আফগানিস্তান দল : আসগর স্টানিকজাই (অধিনায়ক), নজিব তারাকাই, উসমান গনি, মোহাম্মদ শাহজাদ, মুজিব উর রহমান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, শাফিকুল্লাহ, দারউইশ রসুলি, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, গুলবাদিন নাইব, করিম জানাত, শারাফুদ্দিন আশরাফ, শাপুর জাদরান ও আফতাব আলম।
বাসস/এএমটি/১৭৪০/মোজা/স্বব