বাসস দেশ-৭ : ৩ পানি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল

124

বাসস দেশ-৭
হাইকোর্ট-প্রতিবেদন
৩ পানি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল
ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : বাজারে থাকা অনুমোদিত পানির ৩টি ব্র্যান্ডের লাইসেন্স বাতিল ও ৭টি ব্রান্ডের লাইসেন্স বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করেছে পণ্যের মান নিরীক্ষাকারী সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে বিএসটিআই। ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাজারে থাকা অনুমোদিত এ ১০টি ব্র্যান্ডের বোতল ও জারের পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার পর নিম্নমানের বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ফলে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছিল। তার মধ্যে অনুমোদিত সাতটি ব্র্যান্ডের কোম্পানির কাছ থেকে জবাব পাওয়ায় তাদের লাইসেন্স বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করা হয়েছে। আর ৩টি ব্র্যান্ডের কোম্পানির কাছ থেকে জবাব না পাওয়ার তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
লাইসেন্স বাতিল হওয়া কোম্পানি তিনটি হচ্ছে, আনন্দ ফুড এন্ড বেভারেজ এর ‘আনন্দ প্লাস’ ব্র্যান্ড (জার), রিয়েল ফুড এন্ড বেভারেজ এর ‘রিয়েল ফার্স্ট’ ব্র্যান্ড (জার), বেস্টওয়ান ড্রিংকিং এর বেস্ট ওয়ান।
বিএসটিআই বলেছে, ‘বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত ড্রিংকিং ওয়াটার (জার) পণ্যের বিক্রি-বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন হতে বিরত থাকার জন্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হল।’ লাইসেন্স বাতিল হওয়া এই তিনটি কোম্পানি পানি বাজারজাত করলে ভোক্তার স্বার্থে প্রতিষ্ঠান তিনটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আর বিভিন্ন মেয়াদে লাইসেন্স স্থগিত হওয়া কোম্পানিগুলো হচ্ছে, সেফ ইন্টারন্যাশনালের ‘ক্যানি’ ব্র্যান্ড (জার), সিনহা বাংলাদেশ ট্রেড লিমিটেডের ‘এ্যাকুয়া মিনারেল’ ব্র্যান্ড (ছোট বোতল), এএসটি বেভারেজ লি. এর ‘আলমা’ ব্র্যান্ডের (ছোট বোতল), মেসার্স ক্রিস্টাল ফুড এন্ড বেভারেজ এর ‘সিএফবি’ ব্র্যান্ড (জার), মেসার্স ইউরোটেক ট্রেড এন্ড টেকনোলজির ‘ওসমা’ ব্র্যান্ড (জার), ইউনিটি এগ্রো বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ এর ‘এপিক’ ব্র্যান্ড (জার), ফ্রুটস এন্ড ফ্লেভার্স এর ‘ইয়াম্মী ইয়াম্মী’ ব্র্যান্ড (পেট বোতল)।
লাইসেন্স স্থগিত হওয়া এসব ব্র্যান্ডের ব্যপারে বিএসটিআই বলেছে, ‘লাইসেন্স স্থগিতকালীন সময়ে বাধ্যতামূলক মান সনদের মান সনদের আওতাভূক্ত ড্রিংকিং ওয়াটার (জার) পণ্যের বিক্রি-বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন হতে বিরত থাকার জন্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হল।’
বৈধ সিএম লাইসেন্স স্থগিতকালীন সময়ে কেম্পানিগুলো পণ্যটি বাজারজাত করলে ভোক্তার স্বার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গত বছরের ২২ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রতারণার নাম বোতলজাত পানি’ শিরোনামের প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৭ মে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন আইনজীবী শাম্মী আক্তার।
পরে এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর আদালত বাজারে থাকা অবৈধ-অনিরাপদ জার ও বোতলের পানির সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। আদালতের নির্দেশেই বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে গত ২১ জানুয়ারি ৫টি ব্র্যান্ডের বোতল ও জারের পানি মানহীন বলে প্রতিবেদন দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার নতুন করে আবারও প্রতিবেদন দেয় বিএসটিআই।
আদালতে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ডেপুটি এটর্নি মো. মোখলেছুর রহমান। রিটকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. জে আর খাঁন রবিন।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বোতল ও জারের পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ১৫টি কোম্পানির পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন পেয়েছি। তখন পাঁচটি ব্র্যান্ডের পানি মানহীন বলে উল্লেখ করছিল বিএসটিআই। সেদিন আদালত অন্যান্য যেসব কোম্পানির পানি পরীক্ষা করা হয়েছে সেগুলোরও প্রতিবেদন দিতে বলে আদালত। এছাড়া প্রতি দুই সপ্তাহে একবার বাজার থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআইকে পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে বলেছিল।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৫১৫/কেকে