পায়রায় সমুদ্রবন্দর ও বিদ্যুত কেন্দ্র ঘিরে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ

173

বরগুনা, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বন্দর ও বিদ্যুত কেন্দ্রের পাশাপাশি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল, তেল পরিশোধনাগার, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল নির্মাণ করা হবে । নেদারল্যান্ডসের রয়েল হাসকনিং ডিএইচভি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গবেষণা পরীক্ষা ও পরামর্শক ব্যুরো যৌথভাবে এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। ইতোমধ্যে ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে । এর জন্য সময়ের প্রয়োজন হবে ১৮ মাস। আশা করা হচ্ছে, আগামি পাঁচ বছরের মধ্যে পায়রাকে ঘিরে দেশে নতুন অর্থনৈতিক মেরুকরণ স¤পন্ন হবে।
পায়রা হবে আধুনিক এবং শতভাগ ব্যবহারোপযোগী একটি নৌবন্দর। যৌথভাবে নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রটিও হচ্ছে পরিবেশবান্ধব। বন্দরটি কেবল বাংলাদেশ নয়, সার্কভুক্ত দেশসহ চীনও যাতে ব্যবহার করতে পারে সেটি বিবেচনায় রাখা হবে। এর মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগের পথ সুগম হবে। ইতোমধ্যে ভারত ও চীন বন্দর নির্মাণে সহায়তাদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সরকার ঘোষিত মেগা বিদ্যুত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র। কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রটির ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর ব্যয় নির্বাহ বাবদ চীনের এক্সিম ব্যাংক ৪৩০ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। বাংলাদেশে এটি সবচেয়ে বড় চৈনিক বিনিয়োগ। উল্লেখ্য, বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশ-চীন সমান সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। চলতি বছরের মাঝামাঝি শুরু হবে এর যন্ত্রপাতি সংযোজনের কাজ। চীন, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে এর কাঁচামাল কয়লা আমদানি করা হবে। বিদ্যুত কেন্দ্রটি যথাসম্ভব পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম দৃশ্যমান হচ্ছে ক্রমশ। দেশ-বিদেশের পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়ছে, ছেড়ে যাচ্ছে, রাজস্ব আদায় হচ্ছে নিয়মিত। এমনকি যেসব জাহাজ এখান দিয়ে যাওয়ার সময় অতিক্রম করে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা তারাও টোল দিয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান হয়েছে বহু লোকের। আগামীতে বন্দরটি আরও সচল ও ব্যবহার্য হলে বাড়বে কর্মচাঞ্চল্য। চাপ কমবে চালনা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার টিয়াখালীতে এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পায়রায় তৃতীয় সমুদ্রবন্দর। ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের প্রেক্ষাপটে সুবিশাল এক মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।