স্টার্লিংয়ে রক্ষা পেল ম্যানচেস্টার সিটি

159

গেলসেনকারচেন (জার্মানী), ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ (বাসস) : রাহিম স্টার্লিংয়ের শেষ মিনিটের গোলে শালকের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগের লড়াইয়ে ৩-২ গোলের নাটকীয় এক জয় তুলে নিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা শেষ পাঁচ মিনিটে দুই গোল করে শালকের মাঠে এই জয় নিশ্চিত করে।
ভেলটিনস এরিনাতে ম্যাচের ৯০ মিনিটে স্টার্লিং জয়সূচক গোলটি করেন। তার পাঁচ মিনিট আগে বদলী খেলোয়াড় লিওরে সানের দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে ম্যাচে সমতা এনেছিল সিটিজেনরা। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত সানে স্থানীয় টেলিভিশনে বলেছেন, ‘আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আর এই জায়গা থেকেই শ্যুটটি নিতে চাচ্ছিলাম। এর আগেও আমি এই জায়গা থেকে গোল পেয়েছি, তাই মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল।’
বিরতির সময় শালকে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল। ভিডিও এসিসটেন্ট রেফারির সহায়তায় উপহার পাওয়া দুটি পেনাল্টি থেকে নাবিল বেনটালেব ৩৮ ও ৪৫ মিনিটে দুই গোল করেন। এর আগে সার্জিও আগুয়েরোর ১৮ মিনিটের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। ৬৮ মিনিটে অবশ্য সিটি ম্যাচের সবচেয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছিল। বিতর্কিত প্রথম পেনাল্টির জন্য দায়ী নিকোলাস ওটামেন্ডি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলে বাকি সময়টা সিটিজেনদের ১০জন নিয়ে খেলতে হয়েছে। সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা বলেছেন, ‘উন্নতি করতে না পারলে এই প্রতিযোগিতায় আমরা বেশীদুর যেতে পারবো না। ম্যাচের শেষে সানে ও স্টার্লিংই আজ পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’
যদিও আগামী ১২ মার্চ ফিরতি লেগের ম্যাচে জয় ধরে রাখতে হলে সিটিকে কিছু কিছু জায়গায় অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। দ্বিতীয় পেনাল্টির জন্য ফার্নান্দিনহো হলুদ কার্ড পাওয়ায় আগামী ম্যাচে খেলতে পারছেন না, তার সাথে আরো অনুপস্থিত থাকবেন ওটামেন্ডি।
বুন্দেসলিগার রেলিগেশন জোন থেকে মাত্র এক স্থান উপরে থাকা শালকে শেষ চারটি লিগ ম্যাচে জয়বিহীন রয়েছে। তারপরেও প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা দলটিকে পুরো ম্যাচেই চাপের মধ্যে রেখেছিল স্বাগতিক শালকে। প্রথমদিকে নিজেদের অর্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে শালকেকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম ৩০ মিনিট পুরো ম্যাচের আধিপত্যই ছিল সিটির কাছে। কিন্তু নাটকীয় ভাবে শালকে দুটি পেনাল্টিতে গোল আদায় করে নেবার পরই পুরো ম্যাচের চেহারা পাল্টে যায়। ১৮ মিনিটে শালকে গোলরক্ষক রাফ ফেহারম্যানের বাজে একটি পাস থেকে ডেভিড সিলভা বল পেয়ে যায়। তার বাড়ানো সহজ বলে আগুয়েরো কোন ভুল করেননি। গত সাতটি ম্যাচে এটি ছিল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের ১০ম গোল। এক গোলে পিছিয়ে থেকে শালকে যেন প্রাণ ফিরে পায়। স্ট্রাইকার মার্ক ইউটাহর শট নিলেও তা পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায়। টটেনহ্যাম হটস্পারের সাবেক মিডফিল্ডার বেনটালেব পুরো ম্যাচে মধ্যমাঠে ইকে গুনডোগানের সাথে সমান লড়াই করে গেছেন। ৩৮ মিনিটে ড্যানিয়েল কালিগিরির শক্তিশালী শট ওটামেন্ডির হাতে লাগলে ভিএরআর প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় তিন মিনিট পর শালকেকে পেনাল্টি উপহার দেয়া হয়। যদিও পেনাল্টির বিপরীতে সিটি ঘোর আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কাজে দেয়নি। বেনটালেব স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন। ৪৫ মিনিটে ফার্নান্দিনহো সেনেগাল ডিফেন্ডার সালিফ সানেকে বক্সের ভিতর ফাউল করলে আবারো ভিএআর’র সহায়তায় শালকে পেনাল্টি পায়। এবারও বেনটালেবের উপরই আস্থা রেখেছিলেন শালকে কোচ ডোমেনিকো টেডেসকো।
দ্বিতীয়ার্ধে তারকা সমৃদ্ধ সিটিজেনদের বিপক্ষে এগিয়ে থেকে খেলতে নেমে শালকে আর ভীত ছিলনা। অন্যদিকে ৬৮ মিনিটে ওটামেন্ডির লাল কার্ড সফরকারীদের আরো পিছিয়ে দেয়। ৭০ মিনিটে মিডফিল্ডকে শক্তিশালী করার প্রয়াসে অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ সেন্টার ব্যাক ভিনসেন্ট কোম্পানীর স্থানে ডেভিড সিলভাকে মাঠে নামান গার্দিওলা। আর ম্যাচের ১৩ মিনিট বাকি থাকতে আগুয়েরোর জায়গায় খেলতে নামেন লিওরে সানে। ২০১৬ সালে শালকে ছাড়া সানের গোলেই ম্যাচে সমতা ফেরায় সিটিজেন। এরপর স্টার্লিংয়ের শেষ মিনিটের গোলে নাটকীয় এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা।