বাসস ক্রীড়া-১ : দুর্দান্ত এ্যাথলেটিকোর কাছে হার মানতে হলো জুভেন্টাসকে

123

বাসস ক্রীড়া-১
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
দুর্দান্ত এ্যাথলেটিকোর কাছে হার মানতে হলো জুভেন্টাসকে
মাদ্রিদ, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : জুভেন্টাসের হয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মিশন কিছুটা হলেও কাল হোঁচট খেয়েছে। শেষ ১৬’র প্রথম লেগের লড়াইয়ে দুরন্ত এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ২-০ গোলে হার মানতে হয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্টদের।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোর এই ম্যাচের মাধ্যমে রোনাল্ডোর স্প্যানিশ রাজধানীতে ফেরার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু মাদ্রিদে ফেরার স্মৃতিটা সুখকর হলোনা এই পর্তুগীজ সুপারস্টারের। ম্যাচের শেষের দিকে হোসে গিমেনেজ ও দিয়োগো গুডিনের গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে নিজেদের দারুনভাবে এগিয়ে নিয়ে গেল এ্যাথলেটিকো।
ম্যাচ শেষে এ্যাথলেটিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে বলেন, ‘আমরা এখনো শেষ আট নিশ্চিত করিনি। আরো একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। আমরা জানি সেই ম্যাচটা মোটেই সহজ নয়।’
এদিকে জুভেন্টাস বস মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি বলেছেন, ‘সৌভাগ্য যে আমরা তৃতীয় গোল হজম করিনি। কারন ২-০’ এমন একটি ফলাফল যা যেকোন সময় পাল্টে যেতে পারে। তবে এখনো সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি।’
কিন্তু এই ম্যাচের জয়টা সিমিওেনের দলের শতভাগ প্রাপ্য ছিল। এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যানের শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। দুইবার ভিএআর প্রযুক্তি এ্যাথলেটিকোর গোলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, যদিও সিদ্ধান্তগুলো সবই সঠিক ছিল যাতে সুবিধা পেয়েছে জুভেন্টাস। দিয়েগো কস্তাকে ফাউলের অপরাধে এ্যাথলেটিকো করা পেনাল্টির আবেদন বাতিল হয়ে যায় ও আলভারো মোরাতার হেড ভিএআর এর সহায়তায় বাতিল করা হয়।
এতসব আক্রমন সামলাতে জুভেন্টাসকে যেখানে হিমশিম খেতে হয়েছে, বিপরীতে এ্যাথলেটিকো ছিল লক্ষ্যে অবিচল। ম্যাচের ঘন্টাখানেকের মধ্যে সিমিওনে বদলী বেঞ্চ থেকে মাঠে নামান মোরাতা, থমাস লিমার ও এ্যাঞ্জেল কোরেয়াকে। আর বিপজ্জনক এই সিদ্ধান্তেই ফল পায় এ্যাথলেটিকো। তুরিনে ফিরতি ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাচ শুরু করতে হবে জুভেন্টাসকে, তার সাথে যোগ হয়েছে দিয়েগো কস্তা ও থমাস পারটের নিষেধাজ্ঞা। কালকের ম্যাচে দু’জনেই হলুদ কার্ড পেয়ে পরের ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ্যাওয়ে গোলের সুযোগ না নিতে পারার ব্যর্থতা। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে জুভেন্টানকে একেবারেই ছন্দহীন মনে হয়েছে। গোলের তেমন কোন সুযোগও তারা সৃষ্টি করতে পারেনি। আলেগ্রি বলেন, ‘এখানে প্রতিপক্ষ আমাদের সুযোগ করে দিবে না। এটা আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে। তবে এটা ঠিক, এ্যাথলেটিকো আজ আমাদের খেলতেই দেয়নি।
আগামী ১ জুন এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে এবারের ফাইনাল। আর সে কারনে এ্যাথলেটিকো চাইবে যেভাবেই হোক স্বাগতিক সমর্থকদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলতে। রিয়ালের কাছ থেকে তিন বছরের শিরোপা ছিনিয়ে নেবার এর থেকে ভাল সুযোগ আর হতে পারেনা।
অন্যদিকে ইউরোপের সর্বোচ্চ আসরের শিরোপা হাতে নেবার অধীর আগ্রহে থাকা জুভেন্টাস ২৩ বছরের খরা কাটানোর লক্ষ্যে এবার বিপুল অর্থ ব্যয় করে মাদ্রিদ থেকে রোনাল্ডোকে দলে ভিড়িয়েছে। রোনাল্ডোকে দলে নেবার সময় তারা একটা লক্ষ্যের কথাই বারবার বলেছিল, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়’। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অন্যতম সফল ও সেরা খেলোয়াড়কে দলে নিয়ে দারুন ফুরফুরে মেজাজেই ছিল জুভেন্টাস। কিন্তু নক আউট পর্বের প্রথম ম্যাচে রোনাল্ডোকে যেন খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এ্যাথলেটিকোর রক্ষনভাগ যেন রোনাল্ডোকে আটকাতেই কাল মাঠে নেমেছিল। ম্যাচের শুরুতে অবশ্য ৩০গজ দুর থেকে তার ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিক এ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক ইযান ওবলাক দক্ষতার সাথে রুখে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এ্যাথলেটিকো দারুন দুটি সুযোগ নষ্ট করে। গ্রিজম্যানের পাস থেকে কস্তার শট আটকে দেন জুভেন্টাস গোলরক্ষক ওজিচেচ সিজিসনি। এরপর গ্রিজম্যানের লব শট সিজিসনির মাথার উপর দিয়ে ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে কস্তাকে আটকে দেন গিওর্গিও চিয়েলিনি। ৭৮ মিনিটে শেষ পর্যন্ত ডেডলক ভাঙ্গেন জিমিনেজ। মোরাতা ও কস্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত বলে গিমিনেজ সুনির্দিষ্ট প্লেসিং শটে এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দেন। ৮৩ মিনিটে গোডিনের হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। একইসাথে এ্যাথলেটিকোর জয় নিশ্চিত হয়।
বাসস/নীহা/১৪২৫/-স্বব