প্রিমিয়ার লিগ : আগুয়েরোর হ্যাটট্রিকে চেলসিকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ম্যান সিটি

171

ম্যানচেস্টার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ (বাসস) : প্রিমিয়ার লিগের হাই ভোল্টেজ ম্যাচটিকে একপেশে করে দিয়ে চেলসির বিপক্ষে ৬-০ গোলের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। এর ফলে লিভারপুলের সাথে সমান ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে আবারো টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে সিটিজেনরা। ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিটেই সিটি দিয়েছে চার গোল।
প্রথমার্ধের দুই গোলসহ দ্বিতীয়ার্ধে এক গোল করে আর্জেন্টাইন তারকা স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো হ্যাটট্রিক করেছেন। অন্যদিকে গত তিন ম্যাচে দুটিতেই বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে ব্লুজরা। একইসাথে দলের কোচ মরিজিও সারির ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্ট্যামফোর্ড ব্রীজের তিন বছরের চুক্তির মাত্র আট মাস না পেরুতেই চাকুরি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ইতালিয়ান সারি বলেছেন, ‘আমি জানি না, এটা কেবল ক্লাবই বলতে পারবে। আমি আমার দল নিয়ে চিন্তিত। তাদের পারফরমেন্স নিয়ে চিন্তিত। তবে আমার চাকুরি সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে ছিল।’
সর্বশেষ এ্যাওয়ে ম্যাচে বোর্নমাউথের কাছে ৪-০ গোলে পরাজিত হবার ঘটনাটি ছিল ১৯৯৬ সালের চেলসির সবচেয়ে বড় পরাজয়। যা সমর্থকরা কোনভাবেই মেনে নেয়নি। আর ১৯৯১ সালের পর যেকোন প্রতিযোগিতায় কালকের মত এত বড় ব্যবধানে হারেনি ব্লুজরা। ম্যাচের ৪ মিনিটেই রাহিম স্টার্লিংয়ের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কেভিন ডি ব্রুয়েনের দ্রুতগতির একটি ফ্রি-কিক এডেন হ্যাজার্ড কাজে লাগাতে পারেননি। সারি বলেন, চার মিনিটের গোলটি ছিল খুবই হতাশার। বোকার মত আমরা গোল হজম করেছি। ঐ মুহূর্তে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ম্যাচে টিকে থাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। কারন এমন একটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এতগুলো ভুল করলে তা শেষ পর্যন্ত ফলাফলের উপর প্রভাব ফেলে। তারা আজ সত্যিকার অর্থেই চমৎকার ফুটবল খেলেছে।
সিটি বস পেপ গার্দিওলা অবশ্য চেলসিকে ধৈয্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। কাতালান এই কোচও সিটির হয়ে প্রথম বছরের দায়িত্বে বেশ চাপের মধ্যেই ছিলেন। কিন্তু সবসময়ই ক্লাবের ফুটবল পরিচালক ও বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ টিক্সি বেগিরিস্টেইনের আস্থা পেয়েছেন। আর সে কারনেই হয়তবা গত মৌসুমে রেকর্ড ১০০ পয়েণ্ট অর্জন করে লিগ শিরোপও ঘরে তুলেছিল সিটিজেনরা। গার্দিওলা বলেন, আমার প্রথম বছরটা বেশ কঠিন ছিল। কিছু কিছু সময় আমরা হয়তবা ভাল খেলেছি। কিন্তু তার মধ্যে ধারাবাহিকতা ছিলনা। সমর্থকদের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। আসলে ভাল কিছুর জন্য সময় প্রয়োজন। আমি শুধুমাত্র বস, চেয়ারম্যান বিশেষ করে টিক্সির জন্য সিটিতে এসেছি। এজন্য আমার তাকে আশ্বস্ত করতে হয়নি, সে আমাকে চিনে।
স্টার্লিংয়ের গোলে সিটি এগিয়ে যাবার পর আগুয়েরো ম্যাচের সবেেচয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেছিলেন। কিন্তু ১৩ মিনিটে ঐ আগুয়েরোই ২৫ গজ দুর থেকে দুর্দান্ত শটে দলের ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ৬ মিনিট পর রস বার্কলির হেড নিজেদের পোস্টেই যাবার সময় আগুয়েরো সহজেই বল জালে জড়ালে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৩-০। ২৫ মিনিটে ইকে গুনডোগান বিশ্বের সবচেয়ে দামী গোলরক্ষক কেপার আরিজাবালাগাকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি। ৫৬ মিনিটে স্পট কিক থেকে আগুয়েরো হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। এই গোলে লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহ সাথে সমান ১৭ গোল করে প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন আর্জেন্টাইন এই তারকা স্ট্রাইকার। ৬৫ মিনিটে আগুয়েরো বদলী বেঞ্চে চলে যাবার পর গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রিয়াদ মাহারেজ ও ডেভিড সিলভাকে মাঠে নামান গার্দিওলা। ৮০ মিনিটে সিলভার পাস থেকে ওলেকসান্দ্রে জিনচেনকোর ক্রসে স্টার্লিং নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নিয়ে বড় ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সিটি।