অস্ট্রেলিয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর পরিচ্ছন্নতা শুরু

213

টাউন্সভিল (অস্ট্রেলিয়া), ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : অস্ট্রেলিয়ার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর উপদ্রুত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা বুধবার ঘরে ফিরতে শুরু করেছে।
প্রায় দু’সপ্তাহব্যাপী টানা ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা এখন বন্যা পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা ও ধ্বংসস্তুপ অপসারণের কাজ করছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
এদিকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে আবহাওয়া বিরূপ হতে শুরু করেছে। সেখানকার শহরগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ এখনো বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। অনেক এলাকায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
তবে আশার কথা, বৃষ্টিপাত কমে এসেছে।
আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, যেসব এলাকায় প্রতিদিন ১১ দশমিক ৮ ইঞ্চির বেশি বৃষ্টি হচ্ছিল, সেসব এলাকায় তা কমে এসেছে।
আবাহওয়া ব্যুরোর আবহাওয়াবিদ ভিনোর্ড আনান্ড বলেন, ‘এটি সম্ভবত স্মরণকালের ভয়াবহ বৃষ্টিপাত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত দেখতে পাচ্ছি, তা আমাদের মানদ-ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই পড়ে। তবে গত পাঁচ থেকে ১০ দিন ধরে যতটা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছিল, এখন ততটা হচ্ছে না।’
প্রতিদিন মোট ২৫০ মিলিমিটারের কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মৌসুমি বায়ু সমুদ্র তীর হতে ধীর গতিতে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৃষ্টিপাত সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মম-লীয় উত্তরাঞ্চলে সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি হয়। তবে সম্প্রতি মাত্র এক সপ্তাহে এক বছরের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের ফলে রাস্তাঘাট নদীতে পরিণত হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রোববার কর্তৃপক্ষ একটি প্রধান বাঁধের ফ্লাডগেট খুলে দিতে বাধ্য হয়।
টাউন্সভিলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি এলাকায় বন্যার পানি নামতে শুরু করায় স্থানীয়রা কর্দমাক্ত বাড়িঘর পরিস্কার করতে পরস্পরকে সহায়তার জন্য বাড়ি ফিরছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ক্ল্যাইটন লিনিং জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র এবিসিকে বুধবার বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রতিবেশী আছেন, যাদের সঙ্গে আগে কখনো দেখাই হয়নি। এখন আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরস্পরকে সাহায্য করছি। এটি একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা। দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিতে আমাদের পরিচয় হলেও এখন আমরা এলাকার বাসিন্দারা একজোট হয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলা করছি।’
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও কুইন্সল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনাস্তাসিয়া পালাজজুক বুধবার বলেন, কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি কটিয়ে ওঠা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।
ইনস্যুরেন্স কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানায়, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫শ’টি আবেদন জমা পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের ক্ষতির বিবরণ দিয়ে আবেদন করেছেন। এই বন্যায় আনুমানিক ৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের ক্ষতি হয়েছে।
দুর্যোগটি মোকাবেলায় অতিরিক্ত শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সেনা সদস্যরাও সক্রিয় রয়েছে। টাউন্সভিলে একটি প্রধান সেনাঘাঁটি রয়েছে।