প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ : তাজুল ইসলাম

228

সংসদ ভবন, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
আজ সংসদে সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ উদ্যোগ গ্রহণের বিশেষ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একাধিক সভা ও ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কমিটি ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী প্রতিটি গ্রামে উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ স্থাপন সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। পল্লী এলাকায় গ্রামীণ হাটবাজার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও উন্নয়ন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, গ্রাম পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন বিষয়ক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিরাপদ পানির উৎস সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ কর্মপরিকল্পনা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অংশীজনের অংশ গ্রহণে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কেন্দ্রীয় দর্শন হিসেবে গ্রামকে সব সময়ে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। স্বাধীন দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা, কুটির শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল পরিবর্তনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে অঙ্গীকার যুক্ত করেছিলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, গত দুই মেয়াদে শেখ হাসিনার সরকারের বহুমাত্রিক তৎপরতায় গ্রামে অনেক আধুনিক সুবিধা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, কৃষি ও অকৃষি খাতে দক্ষ জনবল বাড়াতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ, গ্রামাঞ্চলে আর্থিক সেবা খাতের পরিধি বিস্তার, কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, বিদ্যুতায়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি গ্রামোন্নয়ন প্রয়াসকে ত্বরান্বিত করেছে। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি গ্রামীণ অর্থনীতির এই বিকাশ প্রক্রিয়ায় সহায়ক হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গ্রামীণ পরিবহন ও যোগাযোগ এবং গ্রামীণ ব্যবস্থা বাণিজ্যের প্রসারের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গ্রামীণ পরিবারের আয় ও কর্মসংস্থান বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন, উন্নত যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুত গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সকল সুবিধাদি প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, গ্রামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ আরো বাড়ানো ও নির্ভরযোগ্য করার লক্ষ্যে গ্রুপ ভিত্তিতে বায়োগ্যাস প্লান্ট ও সৌরশক্তি প্যানেল বসানোর উৎসাহ ও সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, গ্রাম পর্যায়ে কৃষিযন্ত্র সেবাকেন্দ্র, ওয়ার্কশপ স্থাপন করে যন্ত্রপাতি মেরামতসহ গ্রামীণ যান্ত্রিকায়ন সেবা সম্প্রসারণ করা হবে এবং এসবের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান করা হবে। অকৃষি খাতের এসব সেবার পাশাপাশি হাল্কা যন্ত্রপাতি তৈরি ও বাজারজাত করতে বেসরকারি খাতের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।