বাসস দেশ-৬ : নদীকে জীবন্ত সত্ত্বার স্বীকৃতির দাবি

116

বাসস দেশ-৬
নদী-স্বীকৃতি
নদীকে জীবন্ত সত্ত্বার স্বীকৃতির দাবি
ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : নদী বাঁচাতে নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন নদী নিয়ে কাজ করা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষক এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, দখল, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন করে নদী মেরে ফেলছি আমরা। কারণ নদীর অনুভূতিকে আমরা আমলে নেই না। নদীর নিজস্ব একটা সত্ত্বা আছে সেটি আমরা ভাবিনা।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ‘রিভার: এ লিভিং বিয়িং’ নামের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলেনের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে আলোচকরা এ দাবি জানিয়ে বলেন, নদীর অধিকার রক্ষায় এবং নদীকে নদীর মতো থাকতে দিয়ে তার অনুভূতিকে আমলে নিয়ে তার সত্ত্বার স্বীকৃতি দিতে হবে।
দু’দিনের আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের প্রথম দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে ধারণাপত্র তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম প্রমুখ।
ধারণাপত্রে বলা হয়, পানি এবং জীবন সমার্থক। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পানির অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে নদীর অধিকার এখনো ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। দক্ষিণ এশিয়া শত-শত নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত। যেহেতু এ নদীগুলোর অধিকাংশই আন্তঃসীমান্ত নদী, তাই বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং মায়ানমারে বসবাসরত মানুষের কাছে এসব নদীর পানি একটি সাধারণ প্রাকৃতিক সম্পদ।
অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, “নদীকে বাঁচাতে হলে আমাদের নদীকে ভালভাবে বুঝতে হবে। নদী একটি জীবন্ত সত্ত্বা। আমাদের এই জীবন্ত সত্ত্বাকে ভালভাবে বুঝতে হবে। নদীর অনুভূতিকে বুঝতে হবে। এসব অনুধাবনের পর নদী বিষয়ক প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
তিনি বলেন, “নদীর যে সত্ত্বা আছে সেটি বুঝা যায় আর নদী মরে গেলে মানুষের উপর তার প্রভাব পরে। নদী যখন খারাপ থাকে তখন মানুষের জীবনেও খারাপ প্রভাব পড়ে। নদী যে একটি জীবন্ত সত্ত্বা তা আমরা আমলে নেই না। কারণ নদীর অধিকার ও সত্ত্বা আমার ধ্বংস করছি দখল, দূষণ, অপরিকল্পিত পরিকল্পনা এবং জলবায়ু পরির্তনের মাধ্যমে।”
মতিউল ইসলাম বলেন, “আমাদের দেশের বেশিরভাগ নদী জীবন্ত সত্ত্বা থেকে মৃত সত্ত্বায় পরিণত হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানই নদী নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু কেউ নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা হিসেবে বিবেচনা করছে না। উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
দুইদিনের এই সম্মেলনের প্রথম দিনে পানি ও শক্তি এবং জীববৈচিত্র্য ও নদীবাহিত পলি বিষয়ক মোট ছয়টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গবেষকরা। এছাড়া ‘নদী ও জলের ছবি’ বিষয়ক ভিন্নধর্মী ছবি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয় সম্মেলনে। পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের শেষদিন জলবায়ু ন্যায্যতা, এবং আন্ত:সীমান্ত নদী ও নদীর অধিকার রক্ষায় সাধারণ মানুষের উদ্যোগ বিষয়ক মোট নয়টি প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানানো হবে।
বাসস/সবি/কেসি/১৬৪০/এএএ