অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধি শিশুরা ভূমিকা রাখতে পারে

415

ঢাকা, ৩১ মে, ২০১৮ (বাসস) : প্রতিবন্ধিতার শিকার শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ শিশু নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলে একটি ভাল শৈশব পাওয়ার পাশাপাশি তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্ব শিশু দিবস সামনে রেখে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে সেভ দ্য চিলড্রেন আয়োজিত ‘এন্ড অব চাইল্ডহুড (হারানো শৈশব)’ বিষয়ক এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে, প্রান্তিক শিশুরা বিশেষ করে প্রতিবন্ধিতার শিকার হওয়া শিশুরা বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিবন্ধিবান্ধব পরিবেশ না থাকার কারণসহ নানা কারণে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়াও বেড়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ শিশুর উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহ, কিশোরী বয়সে গর্ভধারণ, শিশুমৃত্যু, শিশুশ্রম, অপুষ্টি, শিশুর প্রতি সহিংসতাসহ ৮ টি সূচককে বিবেচনায় নিয়ে গবেষনায় দেখা যায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ৭০১ পয়েন্ট রপয়ে বাংলাদেশ ১৩০তম স্থানে রয়েছে। যা ২০১৭ এর তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেশি। গত এক বছরে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। এ গবেষনায় দেখা যায় পাকিস্তান পেয়েছে ১৪৯ ও আফগানিস্তান ১৬০। বাংলাদেশের পিছনে থাকলেও সামনে রয়েছে শ্রীলংকা ৬০, মিয়ানমার ১০৭ এবং ভারত ১১৩।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৭৫টি দেশের মধ্যে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে রয়েছে যৌথভাবে সিংগাপুর ও স্লোভেনিয়া। শীর্ষ পাঁচের অন্য দেশগুলি হচ্ছে নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। অনিরাপদ শৈশবের দিক দিয়ে শীর্ষ ১০ টি দেশের ৮টিই পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার। নাইজেরিয়ার শিশুদের শৈশব সবচেয়ে কষ্টকর বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশের বেশী শিশু যাদের বয়স ৫ বছরের কম তারা অপুষ্টিতে ভোগে,৪৪ ভাগ কিশোরী মেয়েদের ২০ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যায় এবং ৩ দশমিক ৫ ভাগ শিশু ৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায়।
অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, সেভ দ্য চিলড্রেনের শিক্ষা কর্মসূচির আওতাভুক্ত হোপ প্রকল্পের পরিচালক কামাল হোসেন।
তিনি জানান,বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে ২০ শতাংশেরও কম শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়। স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে দৃশ্যমান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
কামাল বলেন,প্রতিবন্ধিতার শিকার শিশুদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরী।পাশাপাশি একীভূত শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারের জন্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সংগঠনগুলোর সাথে যৌথভাবে কাজ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
সংগঠনের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ও কোয়ালিটির পরিচালক রিফাত বিন সাত্তার বলেন,বাংলাদেশ বিভিন্ন সূচকে উন্নতি করেছে।বিশেষ করে বিদ্যালয়ে পাঠানোর ক্ষেত্রে।তবে, শিক্ষায় অগ্রগতির সুফল সব শ্রেণীর শিশুরা পাচ্ছে না, বিশেষ করে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারি পরিবারের শিশুরা ও প্রতিবন্ধিতার শিকার শিশুরা।