বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

156

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শন
দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি বিশাল মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে অতীতে এর পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্যই তাঁর সরকার এই মন্ত্রণালয়কে দুটি ভাগে ভাগ করে দিয়েছে।’
তাঁর সরকার এখানে কোস্ট গার্ড গঠন করেছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরকেও প্রেরণ করেছে। সেদিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। জাতিসংঘ মিশনে আমাদের পুরুষ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি নারীরাও প্রশংসার সঙ্গে কাজ করছে, বলেন তিনি।
এ সময় দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলায় তাঁর সরকারের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী কারা অভ্যন্তরে কয়েদীদের জন্য সৃজনশীল জীবিকা সংস্থানে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তারা যেন কিছু পুঁজি নিয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তী জীবনে তাদের যেন সেটা কাজে লাগে। সেজন্য কয়েদীদেরও নানা প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
এ সময় তিনি জঙ্গিবাদ এবং জলদস্যু মোকাবেলায় র‌্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অপরাধ দমনে আরো প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বিশ্বে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটছে। কাজেই তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে প্রতি উপজেলাতেই একটি করে ফায়ার সার্ভিস হবে। যাতে করে আগুন লাগলে জনগণ তাৎক্ষণিকভাবে এই সেবাট পায়।’
তিনি এ সময় কোন প্রকল্প গ্রহণের সময়ই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন।
সন্ত্রাস এবং জঙ্গি দমনে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থা সহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সমগ্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাফল্যের পুনরোল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এর স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টি করে সকল শ্রেণী পেশার জনগণকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে পারাতেই সাফল্য এসেছে উল্লেখ করে একে অব্যাহত রাখারও নির্দেশনা দেন।
তিনি এ সম্পর্কে বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস কেবল আমাদের দেশেরই সমস্যা নয়। এটি সমগ্র বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যা কাজেই একে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে।’
তিনি ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি এবং সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা নিরসনে সরকারের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যেই নির্দেশ নিয়েছি উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আমাদের সরকারি কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা করে দেয়ার। কারণ, যারা জনগণের জন্য কাজ করে তারা যেন ভাল থাকতে পারে, নিরাপদে থাকতে পারে সে ব্যবস্থাটাও আমাদের নিতে হবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং এ ব্যাপারেও যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। অর্থাৎ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করাই এই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘তাঁর সরকার বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।’
এ সময় পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্থা করাকে একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি প্রতি বছরে প্রয়োজনীয় জনবলের বিপরীতে কি পরিমাণ যানবাহন এবং জলযান লাগতে পারে তার একটি তালিকা প্রণয়নেরও পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতার রেখে যাওয়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে এবং এখন লক্ষ্য একে উন্নত দেশে পরিণত করা।
এই উন্নত দেশ করার জন্য মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা এবং সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনা রোধে জনগণকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার এবং রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫২০/এমএবি/আরজি