বাসস দেশ-১৪ : কুতুপালংয়ে চালু হলো বাঁশ টেকসইকরণ কেন্দ্র

298

বাসস দেশ-১৪
বাঁশ-টেকসই
কুতুপালংয়ে চালু হলো বাঁশ টেকসইকরণ কেন্দ্র
কক্সবাজার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে আজ শনিবার বাঁশ টেকসইকরণ কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর এবং ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত এই কেন্দ্রটি সকাল ১১ টায় উদ্বোধন করেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রধান মো. আবুল কালাম এনডিসি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কার্যক্রম প্রধান মারিন ডিন কাজডমকাজ এবং ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির প্রধান মো. আবদুস সালাম।
কক্সবাজার জেলায় দুই লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাঁশের তৈরি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়, যা স্থানীয় পরিবেশের ওপরে বিপুল চাপ সৃষ্টি করেছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং খাদ্যবহির্ভূত মানবিক সহায়তা প্রদানে কর্মরত সংস্থাগুলোর একটি জরিপে দেখা যায়, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে এ পর্যন্ত ২ কোটি ২০ লাখের মতো বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বাঁশ ব্যবহারের কারণে বর্তমানে মানসম্মত বাঁশ পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে যে অপরিণত বাঁশ পাওয়া যাচ্ছে, তা মাত্র দুই বছরের মধ্যেই বদলাতে হবে। তাই এই বাঁশ টেশসইকরণ কেন্দ্র (ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন করা হয়েছে। এই কারখানায় আশ্রয়কেন্দ্রের কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত ‘বরাক’ জাতের বাঁশ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে টেকসই করা হবে। এর ফলে বাঁশগুলো ছত্রাক, ক্ষতিকর পোকামাড় থেকে রক্ষা পাবে ও ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের প্রধান মো. আবুল কালাম বলেন, ‘এখানে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের মূল উপকরণই হচ্ছে বাঁশ। বাঁশের স্থায়িত্ব বাড়লে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মজবুত ও টেকসই হবে, পরিবেশের বিপর্যয়ও কমে আসবে। আমরা সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে এরকম পরিবেশবান্ধব ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই।’
উদ্যোক্তারা জানান, এই টেকসইকরণ প্ল্যান্টে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ২০ জন রোহিঙ্গা শ্রমিক বরাক জাতের বাঁশ বরিক এবং সোহাগার দ্রবণে ডুুবিয়ে রাখার কাজ করেন। ১০/১৫ দিন পর এগুলো দ্রবণ থেকে তুলে ৩/৪ দিন শুকানো হয়। নিবিড় গবেষণায় দেখা গেছে, বরিক-সোহাগার দ্রবণ মানবদেহ, ভূগর্ভস্থ পানি, মাটি, গাছ ও প্রাণিসহ পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।
ব্র্যাকের হিসাব অনুযায়ী, এ ধরনের একটি প্ল্যান্ট থেকে মাসে ২ হাজার ৪০০ প্রক্রিয়াকৃত বাঁশ পাওয়া যাবে। ইউএনএইচসিআর এবং ব্র্যাকের এই কার্যক্রম আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই উখিয়া ও টেকনাফে এরকম আরও ৫টি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। প্ল্যান্টগুলোর মাধ্যমে ১০ হাজার ৮০০ থেকে ১২ হাজার বাঁশ টেকসই করা সম্ভব হবে।
বাসস/সবি/এমএন/১৯০০/অমি