বাজিস-১ : ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প ঋণ নিয়ে আলেয়া ও নিলুফা এখন স্বাবলম্বী

318

বাজিস-১
বরিশাল -বিশেষ প্রতিবেদন
‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প ঋণ নিয়ে আলেয়া ও নিলুফা এখন স্বাবলম্বী
॥ শুভব্রত দত্ত ॥
বরিশাল, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ (বাসস) : জেলার সদর উপজেলার শোলনা ও হোগলা গ্রাম সমিতি ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প সহায়তা ঋন নিয়ে ভাগ্য ফিরালো পরিশ্রমী নারী আলেয়া ও নিলুফার।
উপজেলার শোলনা ও হোগলা গ্রাম সমিতির একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিবন্ধী স্বামীকে পাশে বসিয়ে চায়ের দোকান করেন আলেয়া ও নিলুফা। শত প্রতিবন্ধকতার পরও হার মানেনি আলেয়া ও নিলুফা। সহায়তা ঋন নিয়ে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য ফিরালো পরিশ্রমী আলেয়া ও নিলুফা।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে উপজেলা রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের শোলনা গ্রামের আলেয়া বেগম বলেন, ২০১২ সালে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় ঋণ নিয়ে পঙ্গু স্বামী জলিলকে সঙ্গে নিয়ে বসত বাড়ির সামনে দোকার ঘর তৈরি করে চা-পান বিক্রি শুর করি।
আলেয়া বেগম আরো বলেন, শত কষ্টের মাঝেও পঙ্গু স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষে করিনি। তবে সেই দিন বাঁচার অবলম্বন হিসেবে পাশে পেয়েছি “একটি বাড়ি একটি খামার”-এর ক্ষুদ্র ঋণ। দোকানের আয় দিয়ে বসত ঘরটি আজ বন্দক মুক্ত করেছি। মাত্র কিছু দিন পূর্বে বড় মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে আমাদের পারিবারিক স্বছলতা অনেকটাই ফিওে এসেছে।
এবিষয়ে আলাপকালে উপজেলার হোগলা গ্রামের নিলুফা বেগম বলেন, প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে সংসার জীবনে অভাব অনটন দেখতে দেখতে যখন দিশেহারা। তখন অভাব দূর করতে আর সংসারের হাল ধরতে ২০১১ সালে শোলনা গ্রাম সমিতি থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে শুরু করি নতুন জীবন। হোগলা বাজারের কাছে দোকান ঘর তৈরি করে, চা-পান ও ডাব বিক্রি শুরু করি।
নিলুফা আরো বলেন, বর্তমানে দোকান থেকে প্রতি মাসে আয় হয় প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। যে কারনে আমাদের সংসারে এখন কোন অভাব নেই। বর্তমান সময়ে আয় বৃদ্ধির জন্য দোকানে মনহরি মাল উঠানো হয়েছে।
হোগলা গ্রাম সমিতির ম্যানেজার মোসামৎ রুবী বাসস’কে জানান, তৃনমূল পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে, তাদের সঞ্চয় সর্ম্পকে উৎসাহী করা, সদস্য সঞ্চয়ের বিপরীতে সমপরিমাণ অর্থ বোনাস দেওয়া, সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।
এছাড়া তাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য পুঁজি গঠনে সহায়তা করা। পাশাপাশি আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করাসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য।
এবিষয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ গ্রাম সমিতির সমন্বয়কারী জীনাত জাহান তুলি বলেন, জীবন যুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের পর আলেয়া ও নিলুফার সংসারে এখন স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, প্রবল আত্মপ্রত্যয়ী নারী আলেয়া ও নিলুফা এখন স্বপ্ন দেখছেন স্বাবলম্বী হওয়ার। আর এর সবটুকুই সম্ভব হয়েছে দৃঢ় মনোবল ও আত্ম বিশ্বাসের কারণে।
এব্যাপারে জেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) -এর উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হক মৃধা বলেন, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় নিজস্ব সঞ্চয় ও ঋণের অর্থে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সফলতায় বেকার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রেরনা হিসেবেই কাজ করেছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১০২০/নূসী