বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নির্মূল হবে গমের হুইট ব্লাস্ট রোগ

229

মেহেরপুর, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : গমের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে মেহেরপুরে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা শুরু করেছে ১২ সদস্যর একটি বিজ্ঞানী দল। বিদেশী ৪৮টি গমের বিভিন্ন জাত এবং লাইন নিয়ে চলছে গবেষণা। বিজ্ঞানীরা বলছেন- সফল হলে গম চাষে আর কোন বাধা থাকবে না। বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিমূল হবে হুইট ব্লাস্ট রোগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের মাঠে চলছে ব্লাস্ট প্রতিরোধী গবেষণা কার্যক্রম। ম্যাক্সিকো থেকে সংগ্রহ করা ৪৮টি গমের জাত নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ১২ জনের একটি বিজ্ঞানী দল। দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন ধরণের বালাই নাশক সংগ্রহ করে তা প্রয়োগ করা হচ্ছে গমের ক্ষেতে। গমের বীজ বপন থেকে শুরু করে সংগ্রহ করা পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা নিরীক্ষা। এখান থেকেই বেরিয়ে আসবে ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের জাত। সরবরাহ করা হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এর ফলে গম চাষ করে আর ক্ষতির মুখে পড়বে না কৃষকরা।
কৃষি বিঞ্জানী ও কৃষকরা জানান- গত কয়েক বছর ধরে মেহেরপুরে ব্যাপক হারে গমে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। ব্লাস্ট আক্রান্ত জমির গম অল্প সময়ে জমির সব গম ব্লাস্ট আক্রান্ত হয়। কৃষকদের লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে গত দুই বছর ধরে গম চাষ না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছিলেন কৃষি বিভাগ। তারপরও নিষেধ অমান্য করে কৃষকরা গম চাষ করলেও শেষ দিকে এসে ব্লাস্ট আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে বেশিরভাগ ক্ষেতের গম।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় (ময়মনসিংহ) গবেষক হুমায়ন কবীর, (পিএইচডি ফেলো) জানান- ব্লাস্ট মেহেরপুরে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা কৃষক পর্যায়ে মাঠ বেছে নিয়ে দেশী ও বিদেশী উপকরণ সংগ্রহ করে এখানে ব্লাস্ট প্রতিরোধে গমের গবেষণা চলছে। সফল হলে ব্লাস্ট রোগ নিয়ে আর কোন চিন্তা থাকবে না।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো.আখতারুজ্জামান জানান, মেহেরপুরে প্রথম ২০১৬ সালে গমে ব্লাস্ট রোগ সনাক্ত হয়। এরপর থেকে ব্লাস্ট প্রতিরোধে কাজ শুরু করে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। এর সাথে যুক্ত হয় বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন। সর্বপরি ব্লাস্ট নির্মূলে সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা মাঠে এ প্রথম মাঠ পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা গমের উপর গবেষণা করছেন। এখান থেকে ভালো ফল পেলে দেশ থেকে ব্লাস্ট রোগ নির্মূল করা সম্ভব হবে। এবং কৃষকরা ব্যাপক হারে গম চাষ করতে পারবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে গবেষণার সুফল পাওয়া যাবে এবং এখান থেকে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।