বাজিস-৮ : চলতি বছরেই সম্পন্ন হচ্ছে খুলনা নতুন কারাগারের নির্মাণ কাজ

143

বাজিস-৮
খুলনা-নতুন কারাগার
চলতি বছরেই সম্পন্ন হচ্ছে খুলনা নতুন কারাগারের নির্মাণ কাজ
খুলনা, ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : খুলনা জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে প্রায় তিনগুণ বন্দী রয়েছেন। কারাগারের বিভিন্ন ভবনের কক্ষে অনেক কষ্ট করে থাকছেন তারা। কারা কর্তৃপক্ষ সব কিছু সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেও বন্দীরা নানা অসুবিধায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
১৯১২ সালে নগরীর ভৈরব নদীর তীরে নির্মাণ করা হয় ৬০৮ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খুলনা জেলা কারাগার। বর্তমানে এ কারাগারে নারী-পুরুষ মিলিয়ে বন্দীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৮শ’। তবে চলতি বছরে নির্মাণাধীন নতুন কারাগারের কাজ সম্পন্ন হলেই সকল সমস্যার অবসান হবে।
সম্প্রতি সময়ে খুলনা জেলা কারাগার থেকে বিভিন্ন মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়া বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেখানকার কিছু দুর্ভোগের কথা। ধারণ ক্ষমতার থেকে প্রায় তিনগুণ বন্দীর উপস্থিতিতে ওখানে খুব খারাপ অবস্থা। থাকা, খাওয়া, ঘুমসহ নানা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে সমস্যা হয়। তাছাড়া প্রতিদিন বাথরুমে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয় বন্দীদের। তাছাড়া স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও তাদের অনেক দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ধারণ ক্ষমতার থেকে বন্দীর পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকায় ২০০৮ সালে খুলনায় নতুন জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। এরপর স্থান পরিবর্তন, জমি অধিগ্রহণসহ সকল প্রক্রিয়া শেষে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে আধুনিক কারাগার নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। বাইপাস সড়কের পাশে ডুমুরিয়া উপজেলার চক মথুরাবাদের হাসানখালী মৌজায় ৫৬ একর জমির ওপর ২৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ হাজার বন্দী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এ কারাগারের নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। মেয়াদ অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে সকল কাজ শেষ করার কথা।
খুলনা জেলা কারাগারের জেলার জান্নাতুল ফরহাদ জানান, বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৮০০ বন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৪৫ জন নারী বন্দি রয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত তিনশ’ বন্দী ছাড়া বাকীরা সবাই বিভিন্ন বিচারাধীন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তিনি আরও জানান, বন্দীর পরিমাণ বেশি হওয়ায় তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। কারা অভ্যন্তরে ২শ’ জন বন্দী থাকতে পারছে এ ধরনের দু’টি নতুন কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া আরও ৭০ জন বন্দীর ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি কক্ষ তৈরির কাজ অচিরেই শুরু হবে। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন কারাগারে স্থানান্তরর হতে পারলে সকল সমস্যার অবসান হবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া খুলনার নতুন এই কারাগারটি গড়ে তোলা হচ্ছে সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে নির্মাণ করা হবে ছোট-বড় ৫২টি ভবন। বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের পৃথকস্থান, মা ও শিশুদের জন্য পৃথক ব্যবস্থাসহ নারীদের ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল, মোটিভেশন সেন্টার ও পুরুষ বন্দীদের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকছে। আরো থাকবে বন্দীদের জন্য স্কুল, আধুনিক লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম, সেলুন, লন্ড্রি ইত্যাদি। এছাড়া কারাগারে শিশুদের জন্য থাকবে পৃথক ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার। সেখানে শিশুদের জন্য লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। শিশুসহ মা বন্দীদের জন্যও থাকবে আলাদা ১টি ওয়ার্ড। কারাগারে পুরুষ ও নারী বন্দীদের হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র ও নামাজের ঘর থাকবে।
বাসস/সংবাদদাতা/মমআ/১৯০০/মরপা