বাসস ক্রীড়া-৭ : শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ম্যানসিটির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লিভারপুল

170

বাসস ক্রীড়া-৭
ফুটবল-প্রিমিয়ার-লিভারপুল-ম্যানসিটি-প্রিভিউ
শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ম্যানসিটির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লিভারপুল
ম্যানচেস্টার (ইউকে), ২ জানুয়ারি ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা গত মাসে বলেছিলেন, ‘প্রথমে আমি পর্যবেক্ষণ করব, তারপর আমি লিভারপুল ও কোচ জার্গেন ক্লপকে নিয়ে চিন্তা করব। এর আগে আমি খেলায় মনোযোগ দিতে পারব না।’
তবে ২০১৯ সালের প্রথম ম্যাচে সিটির সামনে সুযোগ এসেছে অবশ্যই জয়ী ম্যাচটিতে সফলতা অর্জনের মাধ্যমে লিভারপুলের অগ্রযাত্রার লাগাম টেনে ধরার। এতে বৃহস্পতিবার ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে মৌসুমের প্রথম পরাজয়ের স্বাধটিও পেয়ে দিতে পারবে রেডসদে। এর মাধ্যমে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নরা ব্যবধান চার পয়েন্টে কমিয়ে আনতেও সক্ষম হবে।
গত রোববার সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়লাভের পর গার্দিওলা বলেন, ‘লিভারপুল টেবিলের যে অবস্থানে রয়েছে, তাতে আমরা যদি পয়েন্ট হারাই তাহলে ছিটকে পড়ব। এরপর আর শিরোপার দৌড়ে ফেরা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
লিভারপুল ও ক্লপকে নিয়ে গার্দিওলার চিন্তিত হবার বিষয়টি বিষ্ময়কর নয়। ধারাবাহিক জয়ে থাকা কাতালান এই কোচকে জার্মান কোচ যে পরিমান সমস্যায় ফেলেছিল অন্য কোন দল বা কোচ তা পারেনি। সিটির দায়িত্ব নেয়ার পর গার্দিওলার শিষ্যরা মাত্র একবার হারাতে পেরেছে লিভারপুলকে। অপরদিকে বুন্দেসলিগার জায়ান্ট ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুশিয় ডর্টমুন্ডের দায়িত্ব পালন শেষে ক্লপ এখন ওই ক্লাবটির হাল ধরেছেন।
গত ডিসেম্বরে চার ম্যাচের তিনটিতে ধারাবাহিক পরাজয় দারুণভাবে পিছিয়ে দিয়েছে সিটেজেনদের। যে কারণে এখন তাদের সঙ্গে সমতায় ফেরার লড়াইয়ে রয়েছে ম্যানসিটি। অপরদিকে লিভারপুল চায় নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শিরোপার জন্য ২৯ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে। গত মৌসুমে রেকর্ড সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে লীগ শিরোপা জয়ের সময়ও সিটিজেনরা ভীত ছিল লিভারপুলকে নিয়েই।
এদিকে ‘অল অর নাথিং’ শিরোনামে প্রস্তুতকৃত এক প্রামান্যচিত্রে গার্দিওলাকে দেখা যায় চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে খেলতে এনফিল্ডে যাবার আগে তার কোচিং স্টাফদের বলছেন, ‘ তারা আমাকে ভয় পাচ্ছে। এমন মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বলতে চেয়েছি তারা খুবই বিপজ্জনক।’
তিনটি ভিন্ন ভিন্ন দেশে গিয়ে ২৪টি ট্রফি জয় করা একজন কোচকে নিয়ে প্রচুর ভীতি অবশ্যই থাকে। কিন্তু লিভারপুল ওই চাপ কাটিয়েছিল ৩-০ গোলের জয় নিয়ে। ছয় দিন পর ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ফিরতি লেগে আবারো জয়লাভ করে লিভারপুল। যে ঘটনায় সব সময় শান্ত থাকা গার্দিওলাকে দেখা যায় মেজাজ হারাতে।
এবার নিজেদের আরো শক্তিশালী করেছে লিভারপুল। যার মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত লীগ শিরোপা জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ক্লাবটি। ব্রাজিলীয় গোল রক্ষক আলিনস বেকার এবং বিশ্বের সবচেয়ে দামী ডিফেন্ডার ভিরগিল ফন ডিক সেখানে যোগ দেয়ার পর ২০টি প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচে অংশ নিয়ে ক্লপের শিষ্যরা গোল হজম করেছে মাত্র আটটি।
গত মৌসুমে কিছুটা ধীরস্থীর ভাবে শুরু করে আক্রমনভাগের তিন তারকা মোহাম্মদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো এবং সাদিও মানে বলতে গেলে সিটিজেনদের সিমানায় আগ্রাসন চালিয়েছেন। এবারের প্রিমিয়ার লীগে প্রথমবারের মত এক ম্যাচে গোলের দেখা পেয়েছেন ওই তিন তারকা। শনিবার এনফিল্ডে অনুষ্টিত ওই ম্যাচে ৫-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে আর্সেনালকে পরাজিত করে লিভারপুল।
গার্দিওলা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই ম্যাচে হেরে গেছি আমরা। এখন এমন একটি দলের মোকাবেলা করতে যাচ্ছি, যারা ইউরোপ তথা বিশ্বের মধ্যে সেরা ফর্মে রয়েছে। যে কারণে বৃহস্পতিবারটি হবে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ওই ম্যাচে আমাদের জয়ের চেস্টা করতে হবে যাতে শিরোপার লড়াইটিকে টিকিয়ে রাখা যায় এবং মৌসুমের শেষভাগ পর্যন্ত ধরে রাখা যায়।’
অবশ্য সম্প্রতি কয়েক দফা ব্যর্থতা সত্বেও নিজের ক্লাবটিও যে যথেস্ট ভাল দল, সেটি জানিয়ে দিতে ভুল করেননি গার্দিওলা। অন্তত ডিসেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত পরপর খেতাব জয়ের ফেভারিট হিসেবেই অবস্থান ধরে রেখেছিল রেকর্ড পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সিটি। ইংলিশ ফুটবলের ইতিহাসে পয়েন্টের সেঞ্চুরি করেই বিরল এক রেকর্ড গড়ে শিরোপা জয় করেছিল সিটিজেনরা। আর এই মৌসুমে পরপর দুইবার শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়তে চেয়েছিল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা, যেটি বিগত এক দর্শকে করতে পারেনি প্রিমিয়ার লীগের কোন ক্লাব। একটি অসাধারণ দল হিসেবে প্রতিষ্টিত হবার প্রথম শর্তই হচ্ছে ধারাবাহিক সফলতা। লিভারপুলকে ছাপিয়ে সিটি যদি সেটি করতে পারে তাহলে জন্ম দিবে নতুন এক ইতিহাসের। যে যোগ্যতা তাদের রয়েছে।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৭৫০/স্বব