আওয়ামী লীগ একটানা ১০ বছর সরকারে থাকায় জনগণ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

516

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটানা ১০ বছর সরকারে থাকার কারণে তৃণমূলের জনগণ আজ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘একটানা ১০ বছর আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার কারণে তৃণমূলের জনগণ আজ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্ম পাবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ।’ ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে আজ সোমবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ইংরেজি নতুন বছর ২০১৯ উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৮ সাল জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত বছর ছিল বাংলাদেশের জন্য সাফল্যময় বছর।’ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি। গড়ে তুলি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। নতুন বছর আমাদের সবার জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে এই প্রার্থনা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমরী অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সমগ্র দেশ ও জাতি আজ গর্বিত।’ ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমারও শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সারাবিশ্ব আমাদের আর্থসামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংবিধান ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে এই সব অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নতসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।’
বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি সেক্টরে আমরা নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট-প্রযুক্তির অভিজাত দেশের কাতারে যুক্ত হয়েছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে বর্তমানে ২১.৮% এবং চরম দারিদ্র্যের হার ১১.৩%-এ দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৭৫১ মার্কিন ডলার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,‘ শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যের বই পাচ্ছে। শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশ। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে এবং আশা করছি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা শতভাগে উন্নীত হবে। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায়। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছর হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা।’ তিনি বলেন, সারাদেশে সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার, পাতাল সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রেল, নৌ ও যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ হচ্ছে। মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিশ্বে প্রথম শত বছরের ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বের ৫টি দেশের একটি বাংলাদেশ। উন্নয়নের ৯০ ভাগ কাজই নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে। জনগণকে দেওয়া ওয়াদা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য পরিচালনা এবং বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।