নিজ মাঠে ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করায় বিস্মিত ও গর্বিত সরফরাজ

445

লন্ডন, ২৮ মে ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : অনভিজ্ঞ দল নিয়ে লর্ডসে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় জয় পাওয়ায় অনেকটাই বিস্মিত ও গর্বিত পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ম্যাচের চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্ন-বিরতির পরই দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ পায় পাকিস্তান। এই জয়ে ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারীরা।
ইংল্যান্ডে মৌসুম শুরুর কন্ডিশনকে স্বাগতিক দলের চেয়ে বেশি কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তানী খেলোয়াড়রা। ফিল্ডিংয়েও ইংলিশদের চেয়ে মুন্সয়ানায় এগিয়ে ছিল সফরবারীরা।
পুরো ম্যাচে ৬৪ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আব্বাস। পাশাপাশি চার ব্যাটসম্যানের অর্ধশতকে প্রথম ইনিংসে ৩৬৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় পাকিস্তান।
নিজ দলের বোলার-ব্যাটসম্যানদের পারফরমেন্সে বিস্মিত পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ। তিনি বলেন, ‘সত্যি, আমি সত্যিই বিস্মিত। দলের দিকে তাকালে দেখবেন ইংল্যান্ড দল অনেক বেশি অভিজ্ঞ। কিন্তু আমার দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি গর্বিত।’
অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সরফরাজ। শনিবার ম্যাচের তৃতীয় দিন দুর্দান্ত এক ক্যাচে ইংল্যান্ডের মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান ডেভিড মালানকে থামান তিনি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের আগে আয়ারল্যান্ডের অভিষেক ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিলো পাকিস্তান। ডাবলিনে ৫ উইকেটে ঘাম ঝড়ানো জয় পেলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের পারফরমেন্স ছিলো অনেক বেশি উজ্জল। দলগত পারফরমেন্সের জন্য পাকিস্তানের ফিল্ডিং কোচ ও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটরক্ষক স্টিভ রিক্সনকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন সরফরাজ।
তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড আমাদের চাপে রেখেছিলো এবং সেটি এই টেস্টের জন্য আমাদের তৈরি হতে সহায়তা করেছে। আমরা ভেবেছিলাম, আমরা যদি হেরে যাই তবে আমাদের শিখতে হবে।’
পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে প্রশংসা ঝড়েছে সরফরাজের কন্ঠে, ‘বলে মুভমেন্ট ছিলো, তাই ব্যাটসম্যানদের প্রশংসা করাটা যথেষ্ট হবে না।’
গত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে লন্ডনের ওভালে সরফরাজের নেতৃত্বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতে পাকিস্তান। ফলে তার অধিনায়কত্বে প্রশংসা ছিলো সর্বত্র। নিজেকে নিয়ে সরফরাজ বলেন, ‘নিজেকে নিয়ে বিচার-বিশ্লেষনের কিছু নেই। দলের খেলোয়াড়দের বকাঝকা করি। আপনার সামনা-সামনি করলে কোন ভুল বুঝাবুঝি থাকেনা।’
দ্’ুবছর আগে দায়িত্ব নেয়া কোচ মিকি আর্থারেরও প্রশংসা করেন সরফরাজ। দক্ষিণ আফ্রিকান আর্থারের অধীনে ইংল্যান্ডের মাটিতে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করে পাকিস্তান। দলের প্রত্যক খেলোয়াড়কে আর্থার নিজের মত আগলে রাখেন বলে জানান সরফরাজ।
লর্ডসে দুঃস্মৃতি-সুখস্মৃতি দু’টোই রয়েছে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমিরের। ২০১০ সালে লর্ডসে স্পট-ফিক্সিং-এর জন্য জেল হবার পাশাপাশি পাঁচ বছর সবধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি। দু’বছর আগে নিষেধাজ্ঞা শেষে ক্রিকেটে ফিরে লর্ডসে পাকিস্তানের জয়ের সঙ্গী ছিলেন আমির। এবারও দলের জয়ে অবদান রাখেন তিনি। লর্ডসে ‘হোম অব ক্রিকেটে’ এটি ছিলো পাকিস্তানের পঞ্চম জয়।
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে এক উইকেট শিকার করলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে চার উইকেট নেন আমির। এ ব্যাপারে সরফরাজ বলেন, ‘তার উপর চাপ ছিলো। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করতাম, সে ভালোভাবে ফিরে আসবে। পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ইনজামাম তার সাথে একাকী কথা বলেছেন। কথা বলেছি মিকি এবং আমি নিজেও। যেভাবে তিনি জবাব দিয়েছে তা ছিল অসাধারণ। সে তার লেন্থ পরিবর্তন করেছেন, সে জায়গামত বল করতে পেরেছে, ইংল্যান্ডে উইকেট পাবার এটিই ছিলো প্রধান কারন।’
বাসস/এএফপি/এএমটি/১৮১৫/মোজা/স্বব