বাসস দেশ-১২ : করজাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ

151

বাসস দেশ-১২
রাজস্ব পর্যালোচনা-সভা
করজাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ
ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : করজাল বিস্তৃতির মাধ্যমে কর রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।এজন্য কর কমিশনারদের কর দেয়ার যোগ্য সব মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে করজালে আনা এবং কর ভীতি দূর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।একইসঙ্গে কর জরিপ কার্যক্রম জোরদার ও নিস্ক্রিয় কর সনাক্তকরণ নম্বরগুলো (টিআইএন) সক্রিয় করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার রাজস্ব সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া কর কমিশনারদের এসব নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন,আয়কর বিভাগকে রাজস্ব আহরণের প্রধান খাতে উন্নীত করতে চাই। এ লক্ষ্যে কর আদায় ব্যবস্থা সহজ করার পাশাপাশি করের আওতা বাড়ানো হচ্ছে।
এনবিআর সদস্য (আয়কর) জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বাসসকে বলেন,‘করজাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।এর প্রেক্ষিতে আমরা কর কমিশনারদের কর জরিপ কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং করযোগ্য সকলকে করের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছি।’
তিনি জানান,রাজধানীতে বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিকদের ওপর জরিপ চালানোর সিদ্ধান্ত আগেই ছিল। একই ধরনের জরিপ বিভাগীয় শহর,জেলা শহর ও উপজেলা শহরগুলোতে চালানোর প্রস্তুত নিতে বলা হয়েছে।এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কর দেয়ার যোগ্য তাদেরও করের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এনবিআরের এই কর্মকর্তা বলেন,আমরা জনগণের মধ্যে করভীতি কমাতে চাই। কর যে একটি সহজ পদ্ধতিতে দেয়া যায় সেটাই এখন তুলে ধরছি, যাতে মানুষ কর দিতে উৎসাহিত হয়। পাশাপাশি কর ফাঁকিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের করজালের আওতার আনার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সরকারের রাজস্ব আয়ের মধ্যে প্রায় ৬৪ শতাংশ আসে এনবিআর খাত থেকে। বাকি ৩৬ শতাংশ এনবিআরবহির্ভূত খাত থেকে। এনবিআর খাতের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয় মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আয়কর খাত। তৃতীয় অবস্থানে সম্পূরক শুল্ক এবং চতুর্থ অবস্থানে আমদানি শুল্ক।আগে আমদানি শুল্ক থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হতো।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আয়কর থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয়। বাংলাদেশেও এ খাত থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর নানাবিধ উদ্যোগ চলমান রয়েছে। সরকারের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে আয়কর খাত থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে আয়কর থেকে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ শতাংশ,ভ্যাট থেকে ৩৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে গত ১০ বছরে আয়কর খাতে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২২ শতাংশ।
রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় কর কমিশনারদের উৎসে কর আদায়ে আরো মনোযোগি এবং বকেয়া কর আদায় বা চলমান মামলা নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি (এডিআর) ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাসস/আরআই/১৮১৫/জেহক/আরজি