টানা তৃতীয়বার ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে রেকর্ড সৃষ্টি করলো রিয়াল

193

আবুধাবী, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ (বাসস) : ঘরের মাঠে আবু ধাবীর ক্লাব আল আইনকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের মেলে ধরতে না পারলেও আবু ধাবীর শেখ আবু জায়েদ স্পোর্টস সিটিতে স্বাগতিক ক্লাব আল আইনকে উড়িয়ে দিতে কোন সমস্যার মধ্যে পড়েনি। টিম ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত সমতায় ফিরে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জয়ী হয়ে আল আইন সকলকে বিস্মিত করেছিল। আর শেষ চারে রিভার প্লেটকেও টাই ব্রেকারে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে আবুধাবীর জায়ান্টরা।
এই নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে রেকর্ড চতুর্থবারের মত শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখালো গ্যালাকটিকোরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার থেকে যা একটি শিরোপা বেশি। ফাইনাল শেষে উচ্ছ্বসিত রিয়াল কোচ সানতিয়াগো সোলারি বলেছেন, ‘এই খেলোয়াড়দের জন্য এই জয়টা প্রাপ্য ছিল। অনেক বেশি পরিশ্রম করেই তারা এখানে পৌঁছেছে, রিয়ালকে অনেকগুলো শিরোপা উপহার দিয়েছে। আজ তারা টানা তৃতীয়বারের মত ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে আবারো রিয়ালকে গর্বিত করেছে। যা আমি মনে করি ক্লাবের জন্য অনেক বড় একটি প্রাপ্তি।’
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে লস ব্ল্যাঙ্কোসের সাবেক কোচ হোসে মরিনহোকে বরখাস্তের পর সোলারির ভবিষ্যত নিয়ে বেশ গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। গতকাল তিনি লুকা মড্রিচ, টনি ক্রুস, গ্যারেথ বেলকে নিয়ে বেশ শক্তিশালী একাদশই সাজিয়েছিলেন। ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মড্রিচের গোলেই ১৪ মিনিটে রিয়াল এগিয়ে যায়। ৬০ মিনিটে মার্কোস লোরেন্টের গোলে ব্যবধান দ্বিগুন হয়। সার্জিও রামোস ৭৮ মিনিটে রিয়ালের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন। মাঝে টিসুকাসা শিওতানির সান্তনাসূচক গোল ব্যবধান কমালেও ইয়াহিয়া নাদেরের ইনজুরি টাইমে আত্মঘাতি গোলে বড় জয় নিয়েই শিরোপা নিশ্চিত করে রিয়াল। এই নিয়ে গত ১৩ ম্যাচে ১১তম জয় তুলে নিল সোলারির দল। অক্টোবরে জুলেন লোপেতেগুইয়ের বরখাস্তের পর কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর এটাই সোলারির প্রথম শিরোপা। ক্লাবের হয়ে প্রথম গোলের স্বাদ পাওয়া লোরেন্টে বলেছেন, এটাই আমরা নিজেদের কাছ থেকে আশা করি। প্রতি সপ্তাহে পরিশ্রমের ফসল এই শিরোপা। সিনিয়র দলের হয়ে এটাই আমার প্রথম গোল, আর ফাইনাল ম্যাচে গোল পাওয়ার থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে।
ম্যাচের শুরুটা দারুণ করেছিল আল আইন। ক্লাবের সুইডিশ স্ট্রাইকার মার্কোস বার্গের বল রিয়াল গোলরক্ষক থিবাট কুর্তোয়া আটকে দিলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। কিন্তু বার্গের এই ব্যর্থতাকে পাত্তা না দিয়ে রিয়াল প্রথম গোল তুলে নিতে খুব বেশি দেরি করেনি। করিম বেনজেমার সহায়তায় বাঁ-পায়ের কার্লিং শটে সফরকারীদের এগিয়ে দেন ক্রোয়েট তারকা মড্রিচ। মড্রিচের আরেকটি প্রচেষ্টা আল আইন গোলরক্ষক খালিদ এইসা দুর্দান্ত দক্ষতায় আটকে না দিলে তখনই ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারতো রিয়াল। রায়ান ইয়াসলাম মোজাম্মদ আল জাবেরিও কিছুক্ষন পরে সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হন। ৬০ মিনিটে ২৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার লোরেন্টে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করলে ব্যবধান দ্বিগুন হয় রিয়ালের। ৭৯ মিনিটে মড্রিচের কর্ণার থেকে আল আইন ডিফেন্ডারদের মাথার উপর দিয়ে রামোসের ট্রেডমার্ক হেডে মূলত রিয়ালের বড় জয় নিশ্চিত হয়। ৮৬ মিনিটে জাপানিজ মিডফিল্ডার শিওতানির ফ্রি-কিকে সান্তনাসূচক গোল পায় আল আইন। ইনজুরি টাইমে জুনিয়র ভিনসিয়াসের ডিফ্লেকটেড শট নাদেরের পায়ে লেগে জালে জড়ালে সহজ জয়ে শিরোপা ঘরে তুলে রিয়াল।