বাজিস-১ : জয়পুরহাটে আলু চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগের ব্যাপক তৎপরতা

349

বাজিস-১
জয়পুরহাট-আলু চাষ
জয়পুরহাটে আলু চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগের ব্যাপক তৎপরতা
জয়পুরহাট, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আলু চাষে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটের কৃষকরা এখন আলুর ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৩৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও ইতোমধ্যে ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পন্ন হয়েছে। আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাটে আলু চাষ সফল করতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ রবি ফসল চাষ মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ অর্থাৎ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু লাগানো সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা ভিত্তিক আলু লাগানোর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮শ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ৬ হাজার ৮৫০ হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর, কালাই উপজেলায় ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর ও আক্কেলপুর উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমি। এতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯শ ৫০ মেট্রিক টন। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হয়ে থাকে।
কৃষি বিভাগ জানায়, আলু চাষ সফল করতে জেলায় সারের মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। নভেম্বর মাসের মজুদ সারের পরিমাণ ছিল ইঊরিয়া ৩ হাজার ৭৫৭ মে. টন, টিএসপি ২ হাজার ৩৬৬ মে.টন, এমওপি ৩ হাজার ৩৫০ মে. টন ও ডিএপি ২ হাজার ১৭৫ মে. টন। এর সঙ্গে ডিসেম্বর মাসের চাহিদার মধ্যে রয়েছে ইঊরিয়া ৫ হাজার ৩৪৫ মে. টন, টিএসপি এক হাজার ৩১৮ মে. টন, এমওপি এক হাজার ৯৩১ মে. টন ও ডিএপি এক হাজার ৭৮৮ মে. টন সার। কৃষি বান্ধব সরকারের বিভিন্ন ধরনের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের ফলে জেলায় আলু বীজ বা রাসায়নিক সারের কোন প্রকার সংকট সৃষ্টি হয়নি।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ আরো জানায়, জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন। এ ছাড়াও বিএডিসি’র পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের আলু বীজ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায়।
জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায় গত বছর দেশের গন্ডি পেরিয়ে ৯ টি দেশে রপ্তানী করা হয়। দেশগুলো হচ্ছে- মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, নেপাল ও রাশিয়া। প্রাচীন বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে।
গত বছর ৪২ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এতে আলু উৎপাদন হয় ৮ লাখ ১৫ হাজার মে. টন। ফলন ভালো হওয়ায় জেলায় গ্যানোলা, মিউজিকা, ডায়মন্ড, এস্টোরিকস, কার্ডিনাল, ও রোজেটা জাতের আলু বেশি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। জেলার ১৫টি কোল্ড স্টোরেজে প্রায় দেড় লাখ মে. টন আলু রাখা সম্ভব হয় বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
বাসস/সংবাদদাতা/আহো/০৯৩০/নূসী