৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০১৪ সালের মতো পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

834

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, যে অশুভ শক্তি ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সাধারণ মানুষের ওপর আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছিল তারা আবার ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন প্রাক্কালে দেশে সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, লন্ডন ভিত্তিক এক অপরাধীর বুদ্ধি-পরামর্শে এ অশুভ শক্তি দু’টি পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। একটি হলো পুলিশের একটা অংশকে কিনে নেয়া এবং অপরটি হলো কিছু সংখ্যক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা করে পুলিশ বাহিনীর মনোবল দুর্বল করা।
শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যায় একদল সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে এলে এ উপলক্ষে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে আগুন সন্ত্রাসীরা সফল হবে না। কেননা পুলিশ বাহিনী অধিকতর দক্ষতা ও দৃঢ়তা নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকর সেবা ছাড়া আমরা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন করতে সক্ষম হতাম না।’
পুলিশের মহাপরিচালক (আইজিপি) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ মোট ৮৮ জন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় এবং চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে সম্মত হন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা ফুলের তোড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
মাহব উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম (পিএসপি), সাবেক আইজিপি এটিএম আহমেদুল হক চৌধুরী ও একেএম শহিদুল হক, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ড. আব্দুর রহিম খান, বজলুল করিম, আব্দুল হান্নান ও মো. মতিউর রহমান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতার ব্যাপারে পুলিশ বাহিনীর ওপর মানুষের অগাধ আস্থা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকার ও দলের প্রতি সমর্থন দেয়ার জন্য সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি চাকরিরত কর্মকর্তাদের দেশ প্রেমের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে যেতে উৎসাহিত করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের বৈষম্য থেকে মুক্ত করতে আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন এদেশের মানুষের আত্ম নিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কষ্ট করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার প্রতিশোধ নেয়ার পরিবর্তে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করে।

শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের জনগণ যেহেতু উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে চায়, তাই তারা আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।
৮৮ জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি, ১৯ জন অতিরিক্ত আইজিপি, ২৪ জন ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি), ৩ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১১ জন এআইজি/এসপি ও ১৫ জন অতিরিক্ত এসপি।
সাবেক আইজিপিগণ হচ্ছেন- এটি আহমেদুল হক চৌধুরী, কুতুবুর রহমান, মো. শমশের আলম, একেএম এনায়েত উল্লাহ দেওয়ান, মো. আবদুর রউফ, মো. আওলাদ হোসেন মিয়া, কাজী বজলুর রহমান, আবুল কাশেম হাওলাদার, মো. আব্দুল হান্নান, মো. রুহুল আমীন, মো. সানাউল হক, মো. নূরুল আনোয়ার ও একেএম শহীদুল হক।
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপিগণ হচ্ছেন- মো. সরোয়ার হোসেন, মো. আব্দুস ছাত্তার, মো. আব্দুর রহিম খান, মো. নূরুল আলম, মো. আলী ইমাম চৌধুরী, মো. ফজলুল হক, মো. আব্দুর রহিম, খন্দকার মোজাম্মেল হক, গোলাম মোস্তফা, মো. লুৎফর রহমান, মো. মতিউর রহমান, মো. আব্দুল মান্নান, মো. আব্দুল মাবুব, আমুলিয়া ভূষণ বড়–য়া, মো. নাজমুল হক, ফাতেমা বেগম, বিনয় কৃষ্ণ বালা, নওশের আলী ও মো. আবু হানিফ।
সাবেক ডিআইজিগণ হচ্ছেন- দেওয়ান হাবিবুল্লাহ, মো. শফিক উল্লাহ, খন্দকার সাহেব আলী, কাজী নজরুল ইসলাম, মো. মুখলেসুর রহমান, শাহ আলম সিকদার, পিআর বড়–য়া, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. ওয়ালিউর রহমান, নিবারন কুমার চন্দ, মোস্তফা জামাল উদ্দিন আল আজাদ, কাজী আনোয়ার হোসেন, মো. আলতাফ হোসেন মোল্লা, চৌধুরী এহসানুল কবির, মো. সাজ্জাদ হোসেন, মোস্তাক হোসেন খান, শফিকুর রহমান, মকবুল হোসেন ভূঁইয়া, মো. ওবায়দুল্লাহ, ড. মো. আব্দুর রহিম, এসএম মোজাম্মেল হক নূরুজ্জামান ও মনিরুজ্জামান।
সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজিগণ হচ্ছেন- গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়া, সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, সত্য রঞ্জন বাড়ৈ।
সাবেক এআইজি ও এসপিগণ হচ্ছেন- সৈয়দ বজলুল করিম, চৌধুরী এএজি কবির, মো. মালিক খসরু, মো. রহমত জাহান সিকদার, রফিকুল ইসলাম, ইমামুল হোসেন ফিরোজ, খান আকরামুজ্জামান, আবদুল খালেক, মিয়া লুৎফর রহমান চৌধুরী, ফারুক আহমেদ ও মতিউর রহমান।
সাবেক অতিরিক্ত এসপিগণ হচ্ছেন- বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুল জলিল শেখ, মো. নিয়ামত আলী, খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, একেএম আমিনুল হক, নূর আহমেদ, খোরশেদ আলী, গিয়াস উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা, মীর নওশের আলী, মো. সিরাজুল ইসলাম, আওরঙ্গজেব খান লেনিন ও নূর মোহাম্মদ।
অন্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ হচ্ছেন- মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম (পিএসপি), মো. মমিনুল্লাহ পাটোয়ারী (সাবেক সচিব), মো. আব্দুল হান্নান খান ও (আইজিপির মর্যাদায় সমন্বয়ক) আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।