ইশতেহারে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগের

227

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং দলিত ও চা-বাগান শ্রমিকের সন্তানদের জন্য ‘বিশেষ ব্যবস্থা’র কথাও বলা হয় ।
অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও চা-বাগান শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা এবং সুযোগ সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
ইশতেহারে বলা হয়, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, জামায়াত ইসলামের ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মের রাজনীতি করা মানুষগুলোর ইচ্ছাকৃত উস্কানিমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে বসবাসকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো বারবার আক্রান্ত হয়েছে। সে কারণেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়াও সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যমূলক সকল আইন ও অন্যান্য অন্যায় ব্যবস্থাপনার বন্ধে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানানো হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা অঞ্চলের মানুষ পিছিয়ে থাকবে না বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সে কারণেই সমৃদ্ধির বাংলাদেশের পথে সকলকে সাথে নিয়ে হাত ধরে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখে দলটি। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও চা-বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা এবং সুযোগ সুবিধা অব্যাহত রাখার ব্যবস্থাপনা আওয়ামী লীগ সরকার গ্রহণ করবে।
দীর্ঘদিন ধরে নিজ ভাষায় শিক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো। তাদের সেই ইচ্ছা ও চাওয়ার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে। এতে বলা হয়, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারার স্বাতন্ত্র সংরক্ষণ ও তাদের সুষম উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।
এ ছাড়াও এবারের ইশতেহারে অনিষ্পত্তি সংখ্যালঘু হিন্দুদের সম্পত্তি নিয়ে চলা সকল বিবাদ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারীদের অধিকার পুনঃ প্রতিষ্ঠা এবং সেই সঙ্গে বিবাদমান জমি নিয়ে চলা অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ হবে বলে ইশতেহারে বলা হয় ।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানের শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। পরে আওয়ামী লীগের শাসনমালের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরা হয় তথ্যচিত্রের মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাকের স্বাগত বক্তব্যের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তারপর ইশতেহার ঘোষণা করেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ সময় সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক, প্রকৌশলী, বুদ্ধিজীবী, তরুণ সমাজের প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।