বাজিস-৪ : পায়রা বন্দরে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ

125

বাজিস-৪
বরগুনা-পায়রা বন্দর
পায়রা বন্দরে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ
বরগুনা, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস): পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ১৩৬ সদস্যকে সোমবার প্রশিক্ষণ পরবর্তী সনদপত্র বিতরণ করা হয়েছে।
পায়রা বন্দর কর্তপক্ষ’র ডিআইএসএফ’র প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মুনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সোমবার পায়রা বন্দরের ওয়্যার হাউজে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র চেয়ারম্যান কমোডোর মো. জাহাঙ্গীর আলম। বেসরকারি সংস্থা ‘ডরপ’ এর ডেপুটি টিম লিডার জেবা অফরোজের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পায়রা বন্দর’র উপ-সচিব ও যুগ্ম পরিচালক (ভূমি) খন্দকার নূরুল হক, কেআইআই টি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এমএ সালেহ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র উপ-পরিচালক (ব্রেক বাল্ক) আজিজুর রহমান প্রমুখ। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শারমিন সুলতানা শিল্পী, মিজানুর রহমান ও রুহুল আমিন।
প্রশিক্ষণার্থী মিজানুর রহমান জানান, আমরা আগে জেলে এবং কৃষি পেশায় নিয়োজিত ছিলাম। এখন আমরা দক্ষ টেকনিশিয়ান হিসেবে গড়ে উঠেছি। আমরা আমাদের আয়ের জন্য চিন্ত করি না। দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হয়েছি। অন্তত না খেয়ে মরবো না।
প্রধান অতিথি ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র চেয়ারম্যান কমোডোর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে এবারই প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত প্রতি পরিবার থেকে একজনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মক্ষম করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে তিন মাস মেয়াদী ১৩৬ জনকে বেসিক কম্পিউটার, মটর ড্রাইভিং ও রাজমিস্ত্রির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আগামী তিন বছরে ৪ হাজার ২শ’ নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারকে শুধু প্রশিক্ষণই নয়, পুনর্বাসনের জন্য ৩ হাজার ৫শ’ পরিবারকে পাকা ঘর বরাদ্দ দেয়া হবে। যার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পায়রা বন্দরে ১২টি কম্পোনেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বিমান বন্দর, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ১৮০ কিঃমিঃ রেল লাইন, শিপইয়ার্ড ও শিপ মেরামত কারখানা তৈরি, ট্যুরিজম সুবিধাদি নির্মাণ, পেট্রোলিয়াম রিফাইনারী প্লান্ট স্থাপন ও এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এ সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় বিশাল শিক্ষিত ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র ডিআইএসএফ’র প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মুনিরুজ্জামান জানান, পায়রা বন্দরে শিক্ষিত বেকারদের বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা চারলেন সড়কের কাজ ২০১৯ সালের জুনে শেষ হবে। এছাড়া ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রথম টার্মিনাল জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা, ভারত সরকারের অর্থায়নে মাল্টিপারপাস টার্মিনালের জন্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা, কোল টার্মিনালের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকাসহ মোট ২২ হাজার কোটি টাকার মধ্যমেয়াদী প্রকল্প আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার হার যেমন বাড়বে, তেমনি শিল্প কল-কারখানার প্রসার ঘটবে। কর্মসংস্থান হবে ক্ষতিগ্রস্ত ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর।
বাসস/সংবাদদাতা/১৫১০/নূসী