অস্ট্রেলিয়াকে আগ্রাসী হতে বলছেন ক্লার্ক

203

সিডনি, ২৮ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকে আগাসী ক্রিকেটে খেলার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। ভারতের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজে পুরনো অস্ট্রেলিয়াকে দেখতে চান তিনি। এজন্য দলকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পরামর্শ দিয়ে ক্লার্ক বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দলের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটেছে, এটা স্পষ্ট। কিন্তু এভাবে ন¤্র-ভদ্র থাকলে চলবে না। ক্রিকেট মাঠে অনেক বেশি আগ্রাসী হতে হবে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়েই শুরু হোক অস্ট্রেলিয়ার পুরনো রূপে ফিরে আসা। তবেই সাফল্য সঙ্গী হবে আমাদের। এমনটাই বলতে চাই দলের সকল খেলোয়াড়দের।’
গেল মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল-টেম্পারিং কেলেঙ্কারীর কারণে সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ, ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও তরুণ ক্যামেরন বেনক্রাফটকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দু’জন এক বছর ও শেষ জন নয় মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন।
ঐ পরিস্থিতির পর ক্রিকেট মাঠে অস্ট্রেলিয়া দলের শারীরিক ভাষা অনেকটা মিইয়ে গেছে। প্রতিপক্ষের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়ানো তো দূরের থাক, ন¤্র-ভদ্র আচরনে পরিবেষ্টিত অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলের খেলোয়াড়রা। যার প্রভাব পড়েছে নিজেদের পারফরমেন্সেও।
এমনটা অনেক আগেই টের পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস। চলতি মাসে অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে তিনি বলেছিলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াকে সেই পুরনো আগ্রাসী মেজাজে দেখতে না পেয়ে ভালো লাগেনি। আগ্রাসনের অভাবটা হয়তো তাদের পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলছে। আগের অস্ট্রেলিয়াই ভাল ছিল। তারা মাঠে নামলে একটা লড়াইয়ের ভাব থাকত।’
ডু-প্লেসিসের মত একই সুরে কথা বললেন ক্লার্কও। তাই ভারতের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে আগ্রাসী অস্ট্রেলিয়াকে দেখতে চাইছেন তিনি। ক্লার্ক বলেন, ‘সবার পছন্দের ভদ্র দল হওয়া লক্ষ্য থেকে বের হয়ে আসতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। কঠোর-আগ্রাসীপূর্ণ ক্রিকেটই খেলুক তারা। কারো ভালো লাগুক আর নাই-লাগুক, এটাই আমাদের রক্তে আছে। আমরা এভাবেই খেলতে পছন্দ করি। আগ্রাসী ভাবই আমাদের ক্রিকেটের প্রথম অস্ত্র। আগ্রাসীভাব ছেড়ে দিলে হয়তো আমাদের সবাই ভালবাসতে পারে। কিন্তু এতে আমাদেরই বড় ক্ষতি। তখন আমাদের আর ম্যাচ জিততে হবে না।’
দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রাসীভাব ছিলো ওয়ার্নারের। এমনটা অকপটে স্বীকারও করলেন ক্লার্ক। তাই ভারতের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে ওয়ার্নারের মত আচরনই দেখতে চান ক্লার্ক, ‘সোজাসাপ্টা কথা বলা, চোখে-চোখ রেখে তর্ক করা, প্রতিপক্ষকে তাতিয়ে দেয়া, এগুলোই ওয়ার্নারের স্টাইল। অধিনায়ক হিসেবে আমি তাকে সব সময় দলে চাইতাম। কারণ, ওয়ার্নারের আগ্রাসী মনোভাব দলের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতো। এতে সবাই তেতে উঠতো। তবে অবশ্যই একটা সীমারেখার মধ্যে চলতো সে। ক্রিকেটে ফিরে এলে ওয়ার্নারকে যদি বলা হয়, ন¤্র-ভদ্র থাকতে তবে সে সেটা পারবে না। কারণ, আগ্রানের কারনেই ভালো খেলতে পারে সে। ওয়ার্নারের মত আচরণ ভারতের বিপক্ষে সিরিজে দলের সবাই করুক, এমনটাই চাই আমি।’
অ্যাডিলেডে আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট।