রাজস্ব খাত সংস্কারে অর্থমন্ত্রীর তিন পরামর্শ

877

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : রাজস্ব বিভাগ সংস্কারের জন্য তিনটি কাজ জরুরী ভিত্তিতে করার প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।এগুলো হলো-কর অব্যাহতি কমানো অথবা কোন বিষয়ে কর ছাড় দিতে হলে সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে, ট্যারিফমূল্যকে বিদায় করা কিংবা দারুণভাবে কমিয়ে আনা এবং সিদ্ধান্ত ও নীতি বাস্তবায়নে যে দূর্বলতা রয়েছে তা কমিয়ে আনা।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি আবু কাওসারের লেখা ‘রাজস্ব ভাবনা: যেতে হবে বহুদূর’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগের সদস্য জিয়াউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, দূনীর্তি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুঈদ চৌধুরী ও আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বইয়ের লেখক আবু কাওসার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কর অব্যাহতি এনবিআরের একটি জঙ্গল বলা যেতে পারে। আমি কর অব্যাহতি অনেক কমিয়ে এনেছি। এখন এটা আরো কমাতে হবে অথবা কোথায় কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে সেটা সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক ভাল ভাল আইনকানুন আছে। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হয় না। এখন নতুন করে ভাবতে হবে। সিদ্ধান্ত বা নীতি বাস্তবায়নের যে দূর্বলতা রয়েছে, এটা দূর করতে হবে।
তিনি করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এনবিআর শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে পারে। প্রতিবছর কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের দিয়ে কাজ করানো যেতে পারে। তারা ফিরে এসে যে রিপোর্ট দিবে, যাদের করের আওতায় আনতে বলবে, এনবিআর তাদেরকে করের আওতায় নিয়ে আসবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও করের একক হার হওয়া উচিত। কোথাও যদি কর হার কমাতে হয় বা কাউকে কর অবকাশ দিতে হয় পরে তা করতে পারেন। একেক বছর একেক ধরণের কর হার হওয়া উচিত নয়। কারণ করহারের উপর বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নির্ভর করে। কর আদায়ে কঠোর হলেই বেশি কর আদায় সম্ভব নয়। করদাতাদের সহযোগিতা ছাড়া কর আহরণ বাড়ানো সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ কে আজাদ বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব নয়।এনবিআরকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দিতে হবে। একইসাথে তিনি রাজস্ব কর্মকর্তা ও বেসরকারিখাতের সংশ্লিষ্টদের করের আওতার আনার পরামর্শ দেন।
‘রাজস্ব ভাবনা: যেতে হবে বহুদূর’ বইটিতে বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এনবিআরের সাবেক কয়েকজন চেয়ারম্যান ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার সন্নিবেশিত করা হয়েছে।