বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : দেশব্যাপী সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

186

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-সমবায় দিবস-ভাষণ
দেশব্যাপী সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

গ্রামীণ জনপদ থেকে দারিদ্র্য নির্মূলের লক্ষ্যে ৮১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ৮৭ হাজার গ্রামে ৮২ হাজার ৩৯৫টি গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠিত হয়েছে। উপকারভোগী সদস্য পরিবার ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ২৪০।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ঋণ সুবিধা নিয়ে এ প্রকল্পের উপকারভোগীগণ ক্রমান্বয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।
আমরা দরিদ্র জনগণের জন্য ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করেছি, যোগ করেন তিনি।
তাঁর সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমবায় একটি সম্ভবনাময় শক্তি উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার সমবায় সমিতি রয়েছে। যার সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ৯ লাখ এবং মোট কার্যকরী মূলধনের পরিমাণ ১৩ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।
কৃষিভিত্তিক গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর কৃষিভিত্তিক গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছিল বলেই তার সুফল আজকে দেশবাসী পাচ্ছে, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, তরিতরকারি উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ, ফলমূল উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম স্থান অধিকার করে আছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে অধিকহারে খাদ্য প্রক্রিয়াজাকরণ শিল্প গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, উৎপাদিত খাদ্যশস্যকে উৎপাদনের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজত করতে পারলে বাজারজাত করণের সুবিধা হবে আবার বিদেশের পাঠানো যাবে। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে তাহলে আমাদের দেশে কোন মানুষ আর দরিদ্র থাকবে না।
আমরা দরিদ্রের হার ইতোমধ্যে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্রের হার ২১ ভাগে নামিয়ে এনেছি এবং আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আরো ৪ থেকে ৫ ভাগ দারিদ্র্য আমরা বিমোচন করতে চাই। যাতে বাংলাদেশকে দরিদ্র বলে আর কেউ অবহেলা করতে না পারে, করুণা করতে না পারে।
তিনি বলেন, আমাদের যে নদী-নালা, খাল-বিল- বিশাল জলাধার আছে তার ওপর যে বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি। সেসব ব্যবহার করে দেশের জমিজমাকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষকে আমরা তো খাবার দিতে পারবোই বিশ্বের অনেক দেশকেও আমরা খাবার দিতে পারবো, সেই সক্ষমতাও আমরা অর্জন করতে পারি এবং সেজন্যই আমি সবসময় সমবায়কে গুরুত্ব দেই -যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এবং ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ জায়গায় তাঁর সরকার ব্রডব্যান্ড দিতে সক্ষম হওয়ায় আজকাল অনলাইনেই কেনাকাটা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মাহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাজার খোঁজা, বাজার করা, নতুন পণ্য তৈরি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেরও অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করবে।
তিনি এ সময় সমবায়ের সাহায্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী তৈরি সময়ের দাবি উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পাবে এবং আমাদের আর্থ-সমাজিক আরো উন্নতি হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের যে ধারাটা আজকে আমরা সৃষ্টি করেছি সেই ধারাটা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫০৫/আরজি