বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (প্রথম কিস্তি) : দেশব্যাপী সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

195

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (প্রথম কিস্তি)
শেখ হাসিনা-সমবায় দিবস-ভাষণ
দেশব্যাপী সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দেশের উন্নয়কে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সমবায় একটি পরীক্ষিত কৌশল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমবায়ের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার জন্য এই আন্দোলনকে দেশের কৃষিক্ষেত্রের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৭তম জাতীয় সমবায় দিবস এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৬ এবং ২০১৭ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
নেতৃত্ব সৃষ্টি, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সমবায়ের সঙ্গে অধিকহারে নারীদের সম্পৃক্ত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সমবায় বিভাগ আয়োজিত সমবায় পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে ১০টি ক্যাটাগরিতে সমবায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় দু’বছওে মোট ২০ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে পদক গ্রহণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
সমবায়ের ভিত্তিতে চাষাবাদে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সমবায় ভিত্তিক কৃষির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমাদের করা উচিত এইজন্য যে, আজকাল সকলেই লেখাপড়া শেখে, চাকরি করে, দেশে-বিদেশে চলে যায়। জমি কিন্তু অনাবাদী পড়ে থাকে। আমাদের যেহেতু দেশের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে এই জমি যেন অনাবাদী পড়ে না থাকে।
তিনি জাতির পিতার ভাষণ থেকে ‘আমাদের দেশের জমি এত উর্বর যে বীজ ফেললেই গাছ হয়, গাছ হলে ফল হয়। সেদেশের মানুষ কেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাবে’ উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, কাজেই আমরা এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবো না। আর অনিবাসীদের জমিগুলো উৎপাদনের আওতায় আনতে গেলে আমরা সমবায়ের মাধমেই তা আনতে পারি। সেক্ষেত্রে মালিক যেমন তার অংশ পাবে তেমনি বেশি অংশ পাবে যারা শ্রম দিচ্ছে তারা। আর একটি রক্ষণাবেক্ষণ এবং কৃষি উপকরণ সরবরাহকারী সমবায় পাবে।
তিনি বলেন, এইভাবে একটা নীতিমালা তৈরি করে আমরা যদি আমাদের সমস্ত জমি চাষ করতে পারি বা উৎপাদন বাড়াতে পারি তাহলে আমাদের দেশে আর কখনই কোন খাদ্যের অভাব হবে না।
এলজিআরডি এবং সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দোকার মোশাররফ হোসেন, প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. কামাল উদ্দিন তালুকদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বাংলাদেশ সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপু, সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং নিবন্ধক মো. আব্দুল মজিদও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
একমাত্র সমবায়ের মাধ্যমেই দ্রুত উন্নয়ন করা সম্ভব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কারণেই জাতির পিতা সমবায়কে আমাদের সংবিধানের অর্থনৈতিক নীতিমালায় সংযুক্ত করে গেছেন, সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে।
তিনি বলেন, সমবায় ছিল জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার। তিনি কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, শিল্প উদ্যোগ, কৃষি ঋণসহ সবক্ষেত্রেই সমবায়ভিত্তিক উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থাপনা প্রসারিত করতে চেয়েছিলেন।
জাতির পিতার কন্যা বলেন, জাতির পিতা সংবিধানের ১৩নং অনুচ্ছেদে মালিকানার দ্বিতীয় খাত হিসেবে সমবায়কে স্থান দেন। বঙ্গবন্ধু কৃষি সমবায় সমিতি এবং মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠন করেন। তিনি তাঁতী সমবায় সমিতি ও শিল্প সমবায় সমিতি গড়ে তোলেন। আজ বাংলাদেশের অন্যতম সমবায় ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটা জাতির পিতার হাতেই গড়া ।
চলবে/বাসস/এএসজি-এফএন/১৪৪৫/আরজি