টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ইটভাটার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে প্রায় ৫ লাখ মানুষ

217

টাঙ্গাইল, ২৩ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : জেলার নাগরপুর উপজেলায় অতিরিক্ত ইটভাটার কারণে প্রায় ৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এ এলাকায় গড়ে উঠেছে ২২টি ইটের ভাটা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গড়ে উঠা এসব ইটভাটা স্ব-মহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অবৈধভাবে গড়ে উঠা এসব ভাটার কালো বিষাক্ত ধোঁয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে মানুষকে। বেড়ে চলেছে বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগ, শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সারের মত মহামারি ব্যাধি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গর্ভবতী মায়েরা, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে উঠা।
মানুষের পাশাপাশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে গৃহপালিত পশু-পাখি। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন মৌসুমী ফল। অথচ উপজেলার শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ধান, গম, পাট ও অন্যান্য রবি শস্য। এছাড়া অনেকেই বরই, আম ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
ইটের ভাটার প্রধান কাঁচা মাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় মাটি। ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ইটের ভাটায় বিক্রি করছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। ভাটার কাঁচামালের যোগান দিতে ফসলি জমির টপ সয়েল বা উর্বর মাটি কেটে ফেলায় চাষাবাদের জমি অনুর্বর হয়ে পড়ছে। আর এ মাটি পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রলি বা ট্রাক্টর। অনুমোদনহীন এসব ট্্রাক্টরের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা।
তাছাড়া এ সকল ভাটায় কয়লা পোড়ানোর নিয়ম থাকলেও তারা আইনের তোয়াক্কা না করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে কাঠ। ফলে উজার হচ্ছে বনভূমি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেলেও থামেনি নতুন ইটভাটা নির্মাণ কাজ। প্রতি বছরই ভাটা তৈরী করছে এলাকার একশ্রেণীর প্রভাবশালী ইটভাটা ব্যবসায়ী। যে যত প্রভাবশালী তার ইটের ভাটার পরিমাণ তত বেশী।
নাগরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ার ফলে মানুষের এজমা, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ক্যানসারের মত রোগ হতে পারে।