প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’-এর মঞ্চায়ন শুরু হচ্ছে কাল

290

ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বাংলাদেশের নাটকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরিসরে প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’এর মঞ্চায়ন শুরু হবে আগামীকাল।
এই নাটকে বাংলাদেশের ঐহিত্যবাহী প্রত্ননিদর্শনের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
বগুড়ার মহাস্থানগড়ে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টায় নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে। ২৪ নভেম্বর হবে দ্বিতীয় প্রদর্শনী। দুই ঘন্টার এ নাটকটি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজনা করছে। দীর্ঘ দুই বছর নাটকটির মহড়া অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক মো. বদরুল আনম ভুঁইয়া বাসসকে এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, নাটকটি রচনা করেছেন ড. সেলিম মোজাহার। নির্দেশনায় রয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে মহড়া শেষ হচ্ছে আজ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত এই প্রত্ননাটকটি ৩৫০ জন শিল্প-কলাকুশলীর অংশগ্রহণে নির্মিত প্রত্ননিদর্শন মহাস্থানগড়ের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের শৈল্পিক উপস্থাপনা।
আগামীকাল ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বগুড়ার মহাস্থানগড়ে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। প্রধান অতিথি থাকবেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, নাট্যজন অধ্যাপক আবদুস সেলিম।
একাডেমি থেকে বাসসকে জানানো হয়, মহাস্থানগড়ের প্রাচীন ইতিহাসের সাথে সময়ের পরম্পরায় বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পর্যন্ত সময়কালকে একক গ্রন্থনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নাটকে। প্রাচীন শিকারযুগ থেকে শুরু করে বৈদিকযুগ, আদিবাসি পর্ব, রামায়নের গীত, কালিদাসের কাব্য, চর্যাপদ, সুফিসামা, বৈষ্ণব পদাবলী, ব্রাহ্মসংগীত, লোকগান, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ব্রতচারীদের গান, পঞ্চকবির গান, ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাস, কাব্য-গীত ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পালাগানরূপে নাটকে সংযোজিত হয়েছে।
নাট্যকার সেলিম মোজহার বলেন, বাঙলার প্রাচীনতম রাজধানী পুন্ড্রনগরের ‘মহাস্থান’কে কেন্দ্রভূমিতে রেখে-মহামুনি গৌতম বুদ্ধের বাঙলায় আগমনকাল থেকে ১৯৭১-এর বাংলাদেশ কালব্যক্তির এ-নাট্য-আখ্যানে পুরো গল্পটাকে এক সাথে বলার চেষ্টা হয়েছে । বাঙ্গালা অঞ্চলের ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পট ও তার পরিবর্তনের ইতিহাসের ‘জানা ও জনপ্রিয়’ গল্পপ্রবাহ এ-নাটকের আখ্যানভাগ।
নাটকটির নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, পৃথিবীতে এভাবে আর্কিও ড্রামার ইতিহাস নেই। এর কাজ প্রতœ-ইতিহাসকে দুশ্যকাব্যে রূপান্তরিত করে শিল্পে রূপ দেয়া। মহাস্থানের গৌরবোজ্জ্বল আখ্যানের ভিতর দিয়ে সমগ্র বাঙলার মহাস্থান হয়ে ওঠার গল্প। ‘মহাস্থান’ অগণিত বছরজুড়ে এ-মাটির জেগে ওঠার কথা। হাজার বছর ধরে মানব বসতির কথাামলা নাটকটিতে দর্শকরা উপভোগ করতে পারবেন।