সাতক্ষীরা জেলায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন

370

সাতক্ষীরা, ১৯ মে, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজানের শুরুতেই বাজারে কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। সবজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা কাঁঠাল । জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর কাঁঠাল পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। কাঁঠাল চাষে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষিরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মানান জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ৭টি উপজেলার ৮৭৮ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর ৩৯৬ হেক্টর, তালায় ৩ হাজার ২৭ হেক্টর, কলারোয়াতে ৮৫ হেক্টর, দেবহাটায় ২৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ৫ হেক্টর, কালিগঞ্জ ৩২০ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ করা হয়েছে। চলতি বছরে উপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৩ মে. টন। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৩৯৬০ মে. টন, তালাতে ২৭০০ মে. টন, কলারোয়াতে ১১৯০ মে. টন, দেবহাটায় ২০০ মে. টন, কালিগঞ্জে ৩২১৮ মে. টন, আশাশুনিতে ৮৫ মে. টন এবং শ্যামনগরে ২২০ মে. টন কাঁঠাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সুস্থ-সবল স্বাস্থ্যের জন্য এবং প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের অভাব পূরণে সুস্বাদু কাঁঠাল খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জেলার মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শাহাদাত হোসেন জানান, জেলার ৭৮টি ইউনিয়নের সর্বত্রই ব্যাপক কাঁঠাল গাছ রয়েছে। যার আনুপাতিক সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক এবং একটি কাঁঠাল গাছে ধরেছে গড়ে ২০ থেকে ৭০টি পর্যন্ত কাঁঠাল । প্রতিটি কাঁঠাল আকার ও চেহারাভেদে ৪০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ কাঁঠাল পাকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে এবার জ্যৈষ্ঠ মাসেও পর্যাপ্ত কাঁঠাল বাজারে বেচা কেনা হচ্ছে।
দেবহাটা উপজেলা সদরের কৃষক তপন ঘোষ জানান, কাঁঠালের একটি বড় গুণ হলো এর কিছুই ফেলনা নয়। কাঁঠালের রস থেকে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম পাই। কাঁঠালের বিচি এবং কাঁচা কাঁঠালের মোচা দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া যায়। কাঁঠালের খোলস ও পাতা গরু-ছাগলের প্রিয় খাবার। এ ছাড়া কাঁঠালের কাঠ থেকে আসবাবপত্র তৈরি ভালো হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, জেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের পাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাছ লাগানো হয়েছে। এমনকি বাড়ির আঙিনায়ও ব্যক্তিগতভাবে চাষ করা হচ্ছে কাঁঠাল। চাষিদের দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ। সারা বছর যাতে কাঁঠালের চাষ করা যায় তার জন্যে সরকারি সহযোগিতা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।