বাসস দেশ-১৫ : আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজন গ্রেফতার

328

বাসস দেশ-১৫
হত্যা-গ্রেফতার
আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজন গ্রেফতার
ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০১৮(বাসস) : আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলার একটি দল।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে-মো: নুর ইসলাম (২৯), মো. স্বপন (৩৫) ও আমেনা বেগম (৪৮)। এর মধ্যে নুর ইসলাম ওই হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাদী। ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সেই সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বাসটি জব্দ করা হয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে,সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানার খাসকাওলী গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী জরিনা খাতুন তার বাবা আকবর আলী মন্ডলসহ (৭০) গত ৯ নভেম্বর দুপুরে আশুলিয়ার গাজীরচট মুন্সীপাড়া এলাকায় মেয়ের জামাই নুর ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওইদিন তারা দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেল ৫টার দিকে নিজ বাড়ি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে বের হয় এবং টাঙ্গাইলগামী একটি মিনিবাসে উঠে। কিছুক্ষণ পর বাসে থাকা হেলপার ও আরো কয়েকজন মিলে আলী মন্ডলকে মারধর করে আশুলিয়া মরাগাং এলাকায় চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। জরিনা খাতুনকে নিয়ে বাস চলে যায়। পরে আকবর আলী এবিষয়টি তার স্বজনদের জানায়। খবর পেয়ে জরিনার মেয়ের জামাই নুরুল ইসলামসহ আকবর আলীর স্বজনরা এসে আশুলিয়া ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে মরাগাং এলাকায় জরিনা বেগমের মৃতদেহ খুঁজে পায়।
পিবিআই’র কর্মকর্তারা জানান,এঘটনার পর মেয়ের জামাই নুর ইসলাম বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় গত ১০ নভেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পরবর্তীতে পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটি তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের তদন্তে বেড়িয়ে আসে হত্যাকান্ডের মূলরহস্য। জানা যায় এই মামলার বাদী নিজেই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। হত্যাকান্ডের শিকার জরিনা খাতুনের মেয়ে রোজিনার সাথে বিয়ের পর থেকে তার জামাই এবং শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কলহ চলছিল। সপ্তাহ খানেক আগে এই কলহ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে জরিনা খাতুনের মেয়ে রোজিনাকে তার স্বামী নুর ইসলাম ব্যাপক মারধর করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। রোজিনার স্বামী এবং তার শ্বাশুড়ি তাদের পরিবারের কলহের জন্য রোজিনার মাকে দায়ী করে। তারা জরিনা খাতুনকে কিভাবে সরিয়ে দেয়া যায় তার পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নুর ইসলাম তার মা আমেনা বেগম এবং জরিনা খাতুনের বেয়াই স্বপনের সহযোগিতায় ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে একটি মিনি বাস এবং ওই গাড়ির চালক, কন্ট্রাক্টর ও দুইজন হেলপারসহ ৪জনকে ভাড়া করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসটি আগে থেকে শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখে এবং স্বপন তাদেরকে ওই বাসে উঠিয়ে দেয়।
পিবিআই আরো জানায়, বাসটিতে জরিনা খাতুন এবং তার বাবা ছাড়া আর কোন যাত্রী ছিল না। বাসের চালক ও অপর সহযোগীরা বাসটি আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে আশুলিয়া থানা এলাকার মরাগাং আশুলিয়া ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে প্রথমে জড়িনা খাতুনের বাবাকে মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর জরিনা খাতুনকে হত্যা করে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
বাসস/সবি/এমএমবি/১৭৫০/কেকে