বাজিস-৬ : নীলফামারীতে কৃষিতে অবদান রাখছে প্রতিবন্ধীরা

188

বাজিস-৬
নীলফামারী-প্রতিবন্ধী-কৃষি
নীলফামারীতে কৃষিতে অবদান রাখছে প্রতিবন্ধীরা
নীলফামারী, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : কৃষিতে প্রতিবন্ধীরা অবদান রাখতে পারে সেটি অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেন না। সেই অবিশ্বাস্যকে জয় করেছেন নীলফামারী জেলার প্রতিবন্ধীরা। তারা কৃষিনির্ভর বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হয়ে নিজের এবং পরিবারের সহায় হয়ে উঠেছেন অনেকে। সমাজের সকল নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিয়েছেন তারা। প্রতিবন্ধীতাকে জয় করে মেধা ও শ্রম দিয়ে কৃষি জমিতে ফসল ফলিয়ে অর্জন করেছেন সুনাম।
সমাজের প্রচলিত ধারণা প্রতিবন্ধী মানুষ মানেই বোঝা, দয়ার পাত্র, এমন নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিয়েছেন অদম্য ওই মানুষগুলোই। প্রতিবন্ধীতার সকল বাধা উপেক্ষা করে তারা সক্ষম হয়েছেন কৃষি মতো কঠিন একটি কাজ জয়ে। গ্রামীণ জনপদের এসব মানুষ এখন দেখছেন বড় সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন।
অদম্য এ প্রতিবন্ধীদের মধ্যে জেলার সদর উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামের নরেশ চন্দ্র রায় (৫০) একজন। জন্ম থেকেই তার দুই পা ছোট। নিজে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে না পারলেও কারো কাঁধে বোঝা হয়ে বেঁচে নেই তিনি। নিজ হাতে বিভিন্ন ফসল ফলাচ্ছেন জমিতে। ওই কৃষির আয়ে ফিরিয়ে এনেছেন সংসারের স্বচ্ছলতা।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবহেলিত পরিবার এবং সমাজে। সকলেই আমাদের অক্ষমতাকেই দেখেন বড় করে। সেই অক্ষমতার সকল বাধা জয় করে আমি নিজেকে জড়িয়েছি কৃষিকাজে। সেটিতে সফল হওয়ায় আমার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে সকলের কাছে। সংসারেও স্বচ্ছলতা আনতে পেরেছি।’
জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড়ভিটা গ্রামের এনামুল হকের (৫৫) পা শক্তিহীন। রেশম গুঁটিপোকার সফল চাষি তিনি। পশ্চিম বড়ভিটা গ্রামের খামেদুল ইসলাম (৩৫) পা হারান পাওয়ার টিলার দুর্ঘটনায়। ১৫ বছর আগের সে দুর্ঘটনা দমাতে পারেনি তাকে। তিনি এখন একজন সফল মৎস্য চাষি।
জেলা সদরের খলিশাপচা গ্রামের ধলু রাম রায় (৩৮)। ২৭ বছর আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় দুটি পা হারিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন তিনি। কিন্তু পঙ্গুত্বের সে বাধা অতিক্রম করে কৃত্রিম পা লাগিয়ে নিজ হাতে করছেন শাক-সবজির চাষ।
জেলায় এমন প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা অনেক। কেউ জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী, কেউ প্রতিবন্ধী হয়েছে কোন দুর্ঘটনায় পড়ে। আর কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে। তাদের মধ্যে ডিমলা উপজেলার রফিকুল ইসলাম (৫৫) একজন। কুষ্ট রোগের চিকিৎসা শেষে নিজেকে জড়িয়েছেন কৃষি কাজে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম আযাদ বলেন, এখনো পর্যন্ত প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি।। তবে ওই চাষিরা প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক হয়, সে ক্ষেত্রে প্রণোদনার আওতায় সংযোগ করতে পারি। আর তাদের যদি জমি থাকে প্রদর্শনী দেওয়ার মাধ্যমেও কৃষি কাজের সাথে আমরা তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারি।
বাসস/সংবাদদাতা/মমআ/১৩৫০/-নূসী