বাজিস-৮ : ১৪ শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাবুরপুকুর দিবসে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জলী

174

বাজিস-৮
বাবুরপুকুর-দিবস
১৪ শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাবুরপুকুর দিবসে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধাঞ্জলী
বগুড়া, ১১ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : ১১ নভেম্বর ঐতিহাসিক বাবুরপুকুর দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেছে শহীদ পরিবার ও বিভিন্ন সংগঠন। জেলার ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী,বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে সকাল ৮টায় বাবুরপুকুর শহীদ বেধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল করা হয়েছে।
জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নাদিম মাহমুদের সভাপতিতে বাবুরপুকুর দিবসের আলোচনা সভা শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলার কমিউনিস্ট পার্টিও সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম, কৃষক সমিতির সভাপতি সন্তোষ কুমার পাল, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ কবির খান পাপ্পু, শুভ শংকর গুহরায় বাবুন, মিঠুন পাল, আয়েন উদ্দীন, সাদ্দাম হোসেন, আকতার-উজ-জামান টুটুল, সুজয় কুমার পাল, যতিষ্ঠি কুমার পাল, সুজন সরকার, আহসান হাবিব, উদীচীনেতা আবু বক্কর, দেবু, আলমগীর হোসেন। আলোচনার শুরুতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার কিছু তরুণ ও যুবককে সংগঠিত করেন মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মান্নান পশারী। ১১ নভেম্বর আর রমজানের ২১ তারিখ শেষ রাতে সকলে যখন সেহরী খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো সেই সময় শান্তি কমিটির সহযোগিতায় পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীরা হানা দেয় ঠনঠনিয়ার শাহ পাড়া, মন্ডলপাড়া, তেঁতুলতলা, হাজীপাড়া ও পশারীপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায়। হানাদার বাহিনী সেসব বাড়ি থেকে টেনে হেচড়ে বের করে আনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মান্নান পশারী ও তার ভাই হান্নান পশারী, ন্যাপ কর্মী ওয়াজেদুর রহমান টুকু, জালাল মন্ডল ও তার ভাই মন্টু মন্ডল, আব্দুস সবুর ওরফে ভোলা মন্ডল, মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম, আলতাফ আলী, বাদশা শেখ, বাচ্চু শেখ, ফজলুল হক খান, টিএন্ডটির অপারেটর নূর জাহান, আবুল হোসেন ও তার পিতা গেদু জিলাদার, ছোটভাই আশরাফ আলী, জনাব আলী ও তার পুত্র জাহাঙ্গীর খন্দকার, সিবের আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে। হানাদার বাহিনী এই ২১ জনকে বাড়ি থেকে বের করেই হাত ও চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নেয়।
গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বাবুরপুকুরে। সঙ্গে ছিল শান্তি কমিটির নেতা। সেই নেতাই আটকৃকতদের মধ্য থেকে ১৪ জনকে সনাক্ত করে দেয়। তার সনাক্ত করা টিএন্ডটির মহিলা অপারেটর নূর জাহানসহ ১৪ জনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। বাকি ৭ জনকে সেখান থেকে ছেড়ে দেয় হানাদাররা। পরে ১৯৭৯ সালে বগুড়া প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সেখানকার কবরগুলো পাকা করে দেওয়া হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/১৬৩৫/মরপা