জয়পুরহাট, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলা শহরের আরামনগর এলাকায় রাইস কুকারে বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহতরা হচ্ছেন, মা মোমেনা খাতুন (৬৫), ছেলে আব্দুল মোমিন (৩৫) ও নাতনী বৃষ্টি (১৫)। অগ্নিদগ্ধ ৫ জনকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হলে রাস্তায় ছেলের বউ পরিনা খাতুন (৩৩), নাতনি হাসি (১৩), খুশি (১৩) ও দেড় বছরের নাতি শিশু নূর রাতেই মারা যান। বর্তমানে গৃহকর্তা দুলাল হোসেন (৬৫) চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি আশংকামুক্ত নয় বলে জানান চিকিৎসকরা। বৃষ্টি এবারের জেএসসি পরিক্ষার্থী ছিল।
জয়পুরহাট থানার ডিউটি অফিসার এ এস আই আব্দুল লতিফ ৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় আরামনগর এলাকার দুলাল হোসেন (৬৫)-এর বাড়িতে রাইস কুকার থেকে বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পরিবারের ৮ সদস্য সকলেই বাড়ির ভেতরে ছিলেন। ফলে কেউ বের হতে পারেননি। প্রতিবেশী সেলিমসহ অন্যরা জানালা ভেঙ্গে আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে। দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ঘটনাস্থলে দগ্ধ হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আহতদের শরীর প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানান আধুনিক জেলা হাসপাতালের সার্জারীর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: মফিউর রহমান ও জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা: সাইফুল ইসলাম। অগ্নিকান্ডের ঘটনার খবর পেয়ে জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং সার্বিক বিষয় তদারকি করেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়, পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানসহ জেলার উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের জন্য ২০ হাজার করে ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস বিভাগের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর সিরাজুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ৮ লক্ষাধিক টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।